পানিহাটিতে স্তব্ধ জঞ্জাল সংগ্রহ প্রক্রিয়া, শহর ফের আবর্জনাময়
বর্তমান | ১৫ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: পানিহাটি শহরকে জঞ্জালমুক্ত করতে শারদোৎসবের আগেই কেএমডিএ’তে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছিল। প্রয়োজনে দিনের পাশাপাশি রাতেও আবর্জনা সংগ্রহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র। আবর্জনা সংগ্রহ বন্ধ হয়ে রইল পুজোর কয়েক দিন। সোমবারও তা সচল হয়নি। আগের জমে থাকা আবর্জনা সরানো দূরের কথা, নতুন আবর্জনায় ভরে উঠেছে সারা শহর। তীব্র দুর্গন্ধে নাভিশ্বাস উঠছে শহরবাসীর। বিটি রোড, নীলগঞ্জ রোড ও মধ্যমগ্রাম রোডে উপচে পড়েছে আর্বজনা। নাগরিকরা তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন। এদিকে, পুরসভা আগের মতোই বলেছে, কেএমডিএকে চিঠি দিয়ে সমস্ত ঘটনা জানানো হয়েছে।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের শুরু থেকেই পানিহাটি শহরে জঞ্জাল সমস্যা দেখা দিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর তীব্র ভর্ৎসনার পরেও ছবিতে খুব একটা বদল আসেনি। কেএমডিএ’র বদান্যতায় পানিহাটি শহর থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করে তা ধাপায় ফেলার কাজ চলছে। কিন্তু প্রশাসনিক জটিলতায় সেই কাজ থমকে গেলেই নাভিশ্বাস উঠছে শহরবাসীর। চলতি বছরে উৎসবের দিনগুলোতেও সেই যন্ত্রণা থেকে সাধারণ মানুষের মুক্তি মেলেনি।
এবার পুজোর আগেই কেএমডিএ অফিসে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছিল। ঠিকাদার সংস্থাকে বলা হয়েছিল, প্রতিদিন ১০টি ডাম্পারকে আবর্জনা সংগ্রহের কাজে লাগাতে হবে। প্রয়োজনে রাতেও আবর্জনা বোঝাই ডাম্পারের ট্রিপ চালাতে হবে। সমস্ত জমে থাকা আবর্জনা সরিয়ে ফেলতে হবে। পুজোর কয়েক দিন পানিহাটির আবর্জনা নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিসের কাছে অনুরোধ করা হবে। প্রয়োজনে আশপাশের পুরসভার ডাম্পিং গ্রাউন্ডে তা ফেলা হবে। কিন্তু এই বৈঠকের সিদ্ধান্ত ও নির্দেশ কার্যত খাতায় কলমে রয়ে গিয়েছে। মহালয়ার পর থেকে রোজ দুই থেকে তিন গাড়ি ডাম্পার আবর্জনা সংগ্রহ হলেও ষষ্ঠী থেকে তা কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিটি রোড, নীলগঞ্জ রোড, অমরাবতী মাঠ, মধ্যমগ্রাম রোডে আবর্জনার পাহাড় জমেছে। ফুটপাত ছাড়িয়ে নোংরা-আবর্জনা রাস্তায় উপচে এসেছে। ময়লা ফেলার জায়গা না থাকায় ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আবর্জনা সংগ্রহের কাজও বন্ধ। গঙ্গা থেকে শুরু করে ফাঁকা মাঠ, পুকুরে আবর্জনা ফেলছে সাধারণ মানুষ। পচা দুর্গন্ধে নরককুণ্ড পানিহাটি।
শহরবাসী সুকান্ত দত্ত, সুব্রত বিশ্বাস বলেন, উৎসবের মরশুমে সমস্ত শহর সাফসুতরো রাখা হয়। কিন্তু এখানে নরককুণ্ড। আবর্জনা সংগ্রহ বন্ধ। অলিগলি থেকে মূল রাস্তা– সর্বত্র শুধুই আবর্জনা। শহরে আদৌ কোনও পুরসভা আছে বলে মনে হয় না। প্রতিবাদে শহরবাসী একসঙ্গে রাস্তায় না নামলে পরিস্থিতির বদল কোনও দিন হবে না। আর পুরসভার চেয়ারম্যান মলয় রায় বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা কয়েক দিন আবর্জনা সংগ্রহের গাড়ি পাঠায়নি। তাই সমস্যা তৈরি হয়েছে। আমরা কেএমডিএ’কে বিষয়টি জানিয়েছি। নিজস্ব চিত্র