জয়নগরের পর ফরাক্কা, ফের পকসো-র ধারায় মামলা করতে গড়িমসির অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে
হিন্দুস্তান টাইমস | ১৫ অক্টোবর ২০২৪
জয়নগরের পর ফরাক্কা। ফের একবার নাবালিকার দেহ উদ্ধারের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। ফরাক্কায় নাবালিকার দেহ উদ্ধারের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুবাবুর দাবি, কেন্দ্রের কাছে অপরাধের তথ্য গোপন করতেই কি এই পন্থা?
নাবালিকার বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে সোমবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা। প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় মামার বাড়িতে বেড়াতে আসা কিশোরীর দেহ। এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করতে থানায় গেলে পুলিশ নিহত নাবালিকার পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে বলে অভিযোগ করেছেন শুভেন্দুবাবু। এমনকী ফরাক্কা থানার ইন্সপেক্টর নীলোৎপল মিশ্র নাবালিকার পরিজনদের থানার সামনে ধমকাচ্ছেন এমন একটি ভিডিয়োও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন তিনি।
শুভেন্দুবাবু লিখেছেন, ‘চাঞ্চল্যকর ও হতাশাজনক ঘটনা। মমতা পুলিশ কিছুতেই নিজেদের সংশোধন করতে পারছে না। আরজি কর ও জয়নগরের ঘটনার পরেও যৌন নির্যাতনের অপরাধে তারা উপযুক্ত ধারায় মামলা রুজু করতে গড়িমসি করছে।’
তিনি লিখেছেন, ‘গতকাল ফরাক্কা রেল কলোনিতে মামাবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ৯ বছরের একটি বালিকা নিখোঁজ হয়ে যায়। মেয়েটি কয়েকজন শিশুর সঙ্গে খেলছিল। অনেকক্ষণ পরেও সে বাড়িতে না ফেরায় মা - বাবা প্রতিবেশীদের বাড়িতে খুঁজতে শুরু করেন। আসেপাশের লোকেদের থেকে জানা যায়, দীনু হালদার নামে এক প্রতিবেশী তাকে লজেন্স বা খেলনা দেওয়ার নাম করে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। লোকজন যখন তার বাড়ি গিয়ে তাকে শিশুটির ব্যাপারে জিজ্ঞাবাদ করলে প্রথমে সে ঘটনার কথা অস্বীকার করে। কিন্তু স্থানীয়রা তার বাড়িতে তল্লাশি চালালে শিশুকন্যার বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার হয়। তার মুখে কাপড় গোঁজা ছিল।’
শুভেন্দুবাবুর দাবি, ‘শিশুটির পরিবারের লোকেরা ফরাক্কা থানায় পৌঁছলে পুলিশ বরাবরের মতো বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে যৌন অপরাধের অভিযোগ গ্রহণ করতে অস্বীকার করে। শিশুটির পরিজনদের দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখা হয়। এমনকী পকসো আইনের ধারায় অভিযোগ গ্রহণ করতে অস্বীকার করা হয়। ফরাক্কা থানার ইন্সপেক্টর নীলোৎপল মিশ্র নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। কিন্তু নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরা নিজেদের দাবিতে অনড় ছিলেন। শেষমেষ পুলিশ হার মানে ও যৌন নির্যাতন ও খুনের ধারায় অভিযোগ দায়ের করে।’
শুভেন্দুবাবুর প্রশ্ন, ‘কেন মমতা পুলিশ যৌন অপরাধের ক্ষেত্রে অভিযোগ গ্রহণ করতে এত দায়সারা? কেন্দ্রীয় সংস্থা NCRBকে পাঠানো তথ্যে অপরাধের সংখ্যা কম করে দেখাতেই কি এই পরিকল্পনা?’
জয়নগরে ৯ বছরের শিশুকে যৌন নির্যাতন ও খুনের ঘটনাতেও পুলিশের বিরুদ্ধে পকসো আইনের ধারায় মামলা রুজু না করার অভিযোগ উঠেছিল। এই ঘটনায় পরিবার কেন্দ্রীয় সরকারি হাসপাতালে ময়নাতদন্ত দাবি করায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল পুলিশ। সেই মামলায় হাইকোর্ট মন্তব্য করে, এই ঘটনায় তো স্বাভাবিক বুদ্ধিতে পকসো আইনের ধারা প্রয়োগ করা উচিত ছিল। হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, অবিলম্বে পকসো আইনের ধারা যোগ করে মামলার সমস্ত নথি পকসো আদালতে পাঠাতে হবে। এই মামলার শুনানি হবে বারুইপুরের পসকো আদালতে।