চিকিৎসকদের আন্দোলন নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছিলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আমরণ অনশন এখন 'হাসপাতালে ভরতি পর্যন্ত অনশনে' পরিণত হয়েছে বলে জুনিয়র ডাক্তারদের তোপ দেগেছিলেন কল্যাণ। আর গতকাল রাজভবনের সামনে দাঁড়িয়ে কল্যাণের সেই কটাক্ষের জবাবে কড়া ভাষায় পালটা তোপ দাগলেন আন্দোলনকারী দেবাশিস হালদার। পশ্চিমবঙ্গ জুনিয়র ডাক্তারদের ফোরামের অন্যতম 'মুখ' গতকাল বলেন, 'এখানে কেউ চকোলেট, স্যান্ডউইচ খেয়ে অনশন করছে না'। যদিও তিনি সরাসরি কারও নাম নিয়ে সেই পালটা কটাক্ষ করেননি। তবে বিরোধীদের অনেকেই অভিযোগ করে থাকেন, ২৬ দিনের অনশনে নাকি ওজন বেড়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এই নিয়ে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া এবং রাজনৈতিক মহলেও চর্চা তুঙ্গে। বিরোধীরা কটাক্ষ করে দাবি করে থাকেন, চকোলেট-স্যান্ডউইচ খেয়ে ২৬ দিন 'অনশন' করেছিলেন মমতা।
এদিকে কল্যাণকে জবাব দিয়ে দেবাশিস হালদার বলেন, 'তিনি চেয়েছিলেন যে অনশনকারীরা এখানে বসে মরে যাক। তাই তো! এটাই তো উনি চান? দম ধরে রাখার কথা বলে তিনি কী বোঝাতে চাইলেন। যে এখানে বসে থেকে... আমরা যখন দেখব যে এখানে অনশনকারীরা মরে যাচ্ছে, তখনও আমরা হস্তক্ষেপ করব না। এটাই উনি চান। এই প্রশ্ন বরং তাঁকেই করা হোক, যে দম ধরে রাখা মানে কী? আমরা অনশন করছি। এখানে কেউ চকোলেট, স্যান্ডউইচ খেয়ে অনশন করছে না। আমরা জানি এখানে অনশন করলে কার শরীরে কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে।'
এর আগে গতকাল কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ডাক্তারদের অনশন নিয়ে বলেন, 'কীসের অনশন। এখন তো অনশন হয়েছে হাসপাতালে ভর্তি পর্যন্ত। আমরণ অনশন তো নয়। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে দেখলাম একজন অনশন শুরু করেছে। বিকালেই চলে গেল হাসপাতালে। দমই নেই। ওরা মানুষের সেবা করতে আসেনি। নিজেদের ব্যাপারটা গুছিয়ে নিতে এসেছে। গ্রামের মানুষের কাছে যান না তাঁরা বুঝিয়ে দেবেন। ওই ধর্মতলায় সেফ জোনে অনেক কিছু বলা যায়। ৫০টা ক্যামেরা নিয়ে যা কিছু বলা যায়। সিবিআইয়ের বিরুদ্ধেও তো একটা মামলা করতে পারত। আসলে ডাক্তার যে ছেলেগুলো করছে এরা বাচ্চা ছেলে, এদের মাথাগুলো খাচ্ছে বুড়ো মাথাগুলো। কিছু সিনিয়র ডাক্তার আছে, মাকু পার্টি আছে। বলছে সবাই আসতে পারে, রাজনৈতিক নেতারা আসতে পারবে না। নেতারা এলে চিহ্নিত হয়ে যাবে। কত রগড় দেখব। মানুষ এদের কাউন্টই করছে না। …এরা ডাক্তার হওয়ার অযোগ্য। ডাক্তাররাও মানুষদের খ্য়াপাচ্ছে।'
এদিকে গতকাল ধর্মতলার অনশনমঞ্চ থেকে আরও এক চিকিৎসককে হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। এবার হাসপাতালে ভরতি হয়েছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইএনটি বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তার তনয়া পাঁজা। তাঁর পেটে অসহ্য ব্যথা হচ্ছিল। মাথা ঘুরছিল। কমে গিয়েছিল রক্তচাপ। এর আগে অনিকেত মাহাতো, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায় এবং পুলস্ত্য আচার্য হাসপাতালে ভরতি হয়েছেন অনশনের জেরে অসুস্থ হয়ে।