পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার রাতে এই ঘটনাটি ঘটেছে রাজারহাট-বিষ্ণুপুর (১) নম্বর পঞ্চায়েতের খামারপল্লি এলাকায়। সেখানে দুর্গাপুজোর ভাসানের প্রস্তুতি চলছিল। বহু মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। সেই সময়ে ছোটদের মধ্যে জল ছোড়াছুড়ি চলছিল। অভিযোগ, এক নাবালিকার গায়ে জল এসে পড়ে। তাতে সে এবং তার দুই বান্ধবী অস্বস্তি বোধ করে। ঘটনাটি দেখতে পেয়ে যার হাতে জলের বোতল ছিল, তার থেকে সেটি কেড়ে নিয়ে ফেলে দেন ওই নাবালিকার জেঠামশাই।
এর পরেই বাধে বিপত্তি। নাবালিকার পরিবার জানায়, বোতল ফেলে দিতেই ওই ব্যক্তিকে মারধর করতে শুরু করেন কয়েক জন। মেয়েটির বাবার অভিযোগ, জেঠামশাইকে বাঁচাতে তাঁর মেয়ে গেলে সে-ও মার খেয়ে যায়। ওই নাবালিকা ও তার বান্ধবীদের ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয় বলেও পরিবারের অভিযোগ। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, পুলিশের গাড়ি যতক্ষণে ঘটনাস্থলে পৌঁছয়, তারই মধ্যে ক্লাবের কয়েক জন সদস্য রাজারহাট থানায় চলে আসেন। অভিযোগ, থানার মহিলা আধিকারিক-সহ একাধিক পুলিশ আধিকারিককে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন তাঁরা। জল ছেটানো নিয়ে কী অভিযোগ জমা পড়েছে, তা জোর করে ওই মহিলা পুলিশ আধিকারিকের থেকে দেখতে চান ক্লাবের সদস্যেরা। সংশ্লিষ্ট আধিকারিক তা দেখাতে রাজি হননি। এর পরে পুলিশের গায়ে হাত তোলা হয় বলে অভিযোগ। হামলাকারীদের দলে ছিলেন সুব্রত দাস নামে স্থানীয় পঞ্চায়েতের এক সদস্য। পরে রেকজোয়ানি হাসপাতালে নিগৃহীত পুলিশ আধিকারিকদের মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয়। রাতে সুব্রত-সহ ১২ জনকে গ্রেফতার করে রাজারহাট থানা।
রাতে থানায় ওই গোলমাল থামার পরে পুলিশের তরফে নাবালিকার পরিবারকে ডেকে অভিযোগ নেওয়া হয়। যদিও নাবালিকার পরিবার দাবি করেছে, থানায় গোলমালকারীদের সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগাযোগ নেই।
ঘটনা প্রসঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সদস্য মহম্মদ আফতাবউদ্দিন জানান, তাঁর দল অন্যায় কাজ সমর্থন করে না। তিনি বলেন, ‘‘যদি অন্যায়ের পক্ষ নিয়ে ওই সদস্য কিছু করেন, সেটা দল সমর্থন করবে না। তবে দেখতে হবে, ওই সদস্যকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হল কি না।’’ অন্য দিকে, ওই পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান তথা ধৃত সুব্রত দাসের দাদা রঞ্জন দাস বলেন, ‘‘পুলিশ মিথ্যা মামলা সাজিয়ে ভাইকে ফাঁসিয়েছে।’’