স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাত ৯টা নাগাদ মালিহাটি পঞ্চায়েতের শিল্প ও পরিকাঠামো সঞ্চালক রউফ আলি দলীয় কার্যালয় থেকে মোটরবাইক করে বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁর বাইকের পিছনে বসেছিলেন আলাই শেখ। তিনি সম্পর্কে রউফের কাকা। অভিযোগ, সে সময় আচমকাই কয়েক জন দুষ্কৃতী রউফের বাইক লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে। সঙ্গে সঙ্গে রউফ বাইক ফেলে ঘটনাস্থল থেকে পালান। কিন্তু তাঁর কাকা পালাতে পারেননি।
অভিযোগ, আলাইকে ঘিরে ধরে দুষ্কৃতীরা। তার পর তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়। জখম অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাঁকে প্রথমে রড় দিয়ে পেটানো হয়, তার পর ভোজালি দিয়ে কোপায় দুষ্কৃতীরা। ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর জখম অবস্থায় আলাইকে উদ্ধার করে সালার গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন কান্দির এসডিপিও।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল ব্লক সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘‘বিধায়কের ইন্ধনেই তাঁর লোকেরা এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। খুনের পরিকল্পনা করেছেন বিধায়ক নিজে। উপযুক্ত শাস্তি চাই।’’ যদিও ব্লক সভাপতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘‘তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই খুন, এ কথা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই। তবে যিনি মারা গিয়েছেন, তিনি আমার আত্মীয়। কী কারণে এমন ঘটনা ঘটল, পুলিশ তা তদন্ত করছে। ব্লক সভাপতির অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’
মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার মাজিদ ইকবাল জানান, খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। খুনের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
প্রসঙ্গত, কয়েক মাস ধরে ওই এলাকায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে এলাকা দখল নিয়ে ঝামেলা চলছে। এমনকি, পুজোর আগেই কান্দরা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে বোমাবাজিও হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকার দখল নিতে দুই পক্ষের মধ্যে এই ঝামেলা চলছে দীর্ঘ দিন ধরে।
অন্য দিকে, মুর্শিদাবাদের রানিনগর থানার কলেজপাড়া এলাকায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ির ১০০ মিটার দূরে মাঠের মধ্যে সোমবার রাতে হঠাৎ বোমা বিস্ফোরণ হয় বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার জেরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। এই বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর নেই। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় রানিনগর থানার পুলিশ। কে বা কারা রাতের অন্ধকারে বোমা বিস্ফোরণ ঘটালেন, তা স্পষ্ট নয়।