চরম সিদ্ধান্ত না নিয়ে রিলে অনশন করুক! জুনিয়র ডাক্তারদের আরজি নির্যাতিতার মা-বাবার
প্রতিদিন | ১৬ অক্টোবর ২০২৪
অর্ণব দাস, বারাকপুর: দশদফা দাবি আদায়ে ধর্মতলায় জুনিয়র চিকিৎসদের অনশন ১০ দিন পেরিয়েছে। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ছয়জন আন্দোলনরত চিকিৎসক। এমন অবস্থায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরণ অনশনের বদলে রিলে অনশনের আবেদন জানালেন আর জি করে নিহত তরুণী চিকিৎসকের মা বাবা।
মঙ্গলবার সোদপুর নাটাগড়ের বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাবা বলেন, “অনশন করে একের পর একজন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে। কতদিন আর না খেয়ে থাকা যায়। তাই আমি অনুরোধ করব, কেউ যেন চরম সিদ্ধান্ত না নেয়। বদলে রিলে অনশন করুক।” মায়ের বক্তব্য, “একটা মেয়েকে হারিয়েছি। আর কাউকে হারাতে পারব না। ওঁদের সঙ্গে ফোনে কথা হয়। বলেছি, যদি কেউ খুব অসুস্থ হয়ে যায়, তাহলে যেন হাসপাতালে ভর্তি হয়। তার জায়গায় অন্য কেউ অনশনে বসে যায়।” সিভিক ভলান্টিয়ার প্রসঙ্গে রাজের কাছে সুপ্রিম কোর্টের জবাব তলবের প্রশংসা করেন মৃতার বাবা। বলেন, “প্রথম চার্জশিটেই দেখা গিয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ার জড়িত। ভালো পদক্ষেপ নিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। এখন বাধ্য হয়ে সরকারকে বিষয়টি বিবেচনা করতেই হবে।”
একইসঙ্গে এদিন দুর্গাপুজোর কার্নিভাল না হলে ভালো হত জানিয়ে দ্রোহের কার্নিভালের প্রসঙ্গ তুলে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হন সন্তানহারা মা-বাবা। তাঁরা বলেন, এদিন যে দ্রোহের কার্নিভাল হচ্ছে, এটা মানুষের নৈতিক জয়। বন্ধ করতে চেয়েও এটা বন্ধ করা যায়নি। পুলিশ ব্যারিকেড দিয়েছিল, হাই কোর্টের অর্ডারে পুলিশই ব্যারিকেড সরিয়েছে। এতদিন ধরে পর পর পুলিশ যে কাজ করছে, সমস্ত কিছুতেই পুলিশ আদালতের সমালোচনায় পড়ছে। এদিনও তাই হল। সঙ্গে বাবার মত, “পুজোর কার্নিভাল না করলেই ভালো হত। ভালো জিনিসটা সবার বোঝা উচিত। আন্দোলনরত ছাত্রদের সঙ্গে বসে মুখ্যমন্ত্রী কেন মীমাংসা করছেন না বুঝতে পারছি না।”
তবে এদিনও সিবিআইয়ের প্রতি আস্থা রাখার কথা জানিয়েছেন তারা। মা-বাবা জানিয়েছেন, “সিবিআইয়ের চার্জশিট নিয়ে অসন্তুষ্ট নই। আরও চার্জশিট জমা পরবে। মেয়ের মৃত্যুর পর এত প্রমান লোপাট করা হয়েছে, আমাদের বাইরে বসিয়ে প্রমাণ লোপাট করা হয়েছে। তাই তদন্তের জন্য সময় দিতেই হবে, আমাদেরও ধৈর্য ধরতে হচ্ছে।” সব দোষীরাই ধরা পড়বে বলেও এদিন আশা প্রকাশ করেন তারা। যদিও অনশনরত চিকিৎসকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে বৈঠক করেছে প্রশাসন। তবুও সদিচ্ছার অভাবের অভিযোগ তুলে মায়ের সংযোজন, বৈঠকে ডাকা হচ্ছে, কিন্তু সহযোগিতা করা হচ্ছে না। ওরা (অনশনরত চিকিৎসক) নিজেদের জন্য কিছুই চাইছে না। মানুষের জন্য চাইছে। তাই মানুষ ওদের পাশে দাঁড়িয়েছে।