মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার ষষ্ঠ শুনানি ছিল। সেই শুনানিতে ছ’দফা প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য সরকার। শুনানিতে ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স ওয়েস্ট বেঙ্গল’-এর পক্ষে দাঁড়ানো আইনজীবী করুণা নন্দী আদালতে জানান, রাজ্য সরকারের ‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্পে সিভিক ভলান্টিয়ারকে রাখা হচ্ছে। উল্লেখ্য, আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় সিবিআইয়ের দেওয়া চার্জশিটে ‘মূল অভিযুক্ত’ হিসাবে এক জন সিভিক ভলান্টিয়ারের নাম আছে। সেই কথা উল্লেখ করে করুণার প্রশ্ন, ‘‘কী ভাবে রাত্তিরের সাথী প্রকল্পে সিভিক ভলান্টিয়ারকে নিয়োগ করা হচ্ছে?’’ সেই কথা বলতে গিয়ে তিনি টেনেছেন কলকাতা হাই কোর্টের একটি নির্দেশের কথা। করুণা বলেন, ‘‘কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়েছিল, হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে সিভিক ভলান্টিয়ারকে রাখা যাবে না।’’ যা শুনে রাজ্যকে একাধিক প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করেন প্রধান বিচারপতি। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘কী ভাবে সিভিক ভলান্টিয়ারের নিয়োগ হয়? কোন কোন যোগ্যতার নিরিখে নিয়োগ হয়? নিয়োগের আগে কী ভাবে তাঁদের দেওয়া তথ্য যাচাই করা হয়? কোন কোন প্রতিষ্ঠানে সিভিক ভলান্টিয়ার আছে? সিভিক ভলান্টিয়ারকে কী ভাবে বেতন দেওয়া হয়, কত বাজেট বরাদ্দ করা হয় তার জন্য?’’
এ সব নিয়ে রাজ্যের কাছে হলফনামা চাইল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘পরের শুনানিতে হলফনামা দিয়ে বিস্তারিত ভাবে জানাতে হবে।’’ শুধু তা-ই নয়, প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘‘রাজ্যকে হলফনামায় নিশ্চিত করতে হবে স্কুল, হাসপাতালের মতো কোনও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে সিভিক ভলান্টিয়ার রাখা যাবে না। এমনকি, কোনও থানা এবং তদন্তের সঙ্গে জড়িত কোথাও সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হয়নি, তা নিশ্চিত করতে হবে রাজ্য সরকারকে।’’
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারের শুনানিতে আরজি কর মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ জমা দেয় সিবিআই। সিবিআইয়ের দেওয়া রিপোর্টে চার্জশিটের কথাও উল্লেখ রয়েছে। এমনকি, চার্জশিটের কপিও জমা দেওয়া হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। আদালতে সিবিআই জানায়, ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার ছাড়া আর কেউ এই ধর্ষণ-খুন মামলায় জড়িত কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।