• জিনিসপত্র অগ্নিমূল্য লক্ষ্মীপুজোয় কাটছাঁট 
    বর্তমান | ১৬ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও আরামবাগ: আজ, বুধবার কোজাগরী লক্ষ্মীর আরাধনায় মাতবেন বাংলা। তার আগে মঙ্গলবার দিনভর চলল কেনাকাটা। ফলমূল থেকে শুরু করে ভোগ রান্নার জন্য সব্জি সহ অন্যান্য সামগ্রীর দাম বেশি হওয়ায় বাজারে বেরিয়ে হিমশিম খেলেন অনেকে। গিন্নির লিখে দেওয়া ফর্দে কাটছাঁট করেই লক্ষ্মীপুজোর বাজার সারতে দেখা গেল মধ্যবিত্ত বাঙালিকে।

    এদিন বিকেলে পুরুলিয়া শহরের হাটেরমোড়ে নিজের দোকানে মুখ ব্যাজার করে বসেছিলেন ফল ব্যবসায়ী আব্দুল সাত্তার। আক্ষেপের সুরে তিনি বলছিলেন, ‘বাজারের অবস্থা দেখে মনেই হচ্ছে না যে বুধবার লক্ষ্মীপুজো রয়েছে। পুজোর আগেরদিনের সেই জমজমাট ভিড় যেন উধাও।’ তবে তাঁর আশা, বুধবার সারাদিন পড়ে রয়েছে। আশা করি ভিড় বাড়বে। আরামবাগে গিন্নির দেওয়া ফর্দ হাতে বাজার করতে এসেছিলেন শহরের বাসিন্দা অসীম বেরা। ফলের দাম শুনে কিছুটা হকচকিয়ে যান তিনি। তারপরই গিন্নির লিখে দেওয়া ফর্দ থেকে কাটছাঁট করতে থাকেন। অসীমবাবু বলেন, কাটছাঁট না করলে টাকায় কুলাতে পারব না। তবে সাধ্যমতো সবকিছু কিনছি। 

    পুরুলিয়া, ঝলদা, রঘুনাথপুর থেকে শুরু করে বাঁকুড়া, আরামবাগ, খানাকুল সর্বত্র একই ছবি লক্ষ্য করা গিয়েছে। সর্বত্রই ফল ও সব্জির দাম ছিল আকাশছোঁয়া। এদিন ছোট শিষ ডাব ৩০-৫০টাকা, নারকেল সাইজ অনুযায়ী ৪০-৫০টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া কেজি প্রতি শসা ৫০ -৬০টাকা, আপেল ১২০-১৪০টাকা, বড় সাইজের বেদানা ১৮০টাকা, নাসপাতি ১২০টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। কাঁঠালি কলা প্রতি পিস পাঁচ থেকে ছ’টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়াও ৮৫০টাকায় ফলের স্পেশাল ঝুড়িও সজিয়েছিলেন পুরুলিয়ার ফল ব্যবসায়ীরা। আরামবাগের এক ফল ব্যবসায়ীর কথায়, প্রায় প্রতিটি ঘরেই কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো হয়। যেকারণে ফলের চাহিদা বেশি থাকে। তাই অন্যান্য দিনের তুলনায় দাম একটু চড়া রয়েছে।

    সব্জি, ফুল ও প্রতিমাও চড়া দামে বিক্রি হয়েছে। এদিন পটল, ঝিঙে ৬০টাকা, গাজর ১২০টাকা, কুমড়ো ৩০-৪০টাকা, বাঁধাকপি ১০০টাকা, টম্যাটো ১৫০টাকা, বেগুন ৮০-৯০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এবছর পুজোর আগে বৃষ্টিতে ফুল চাষে ক্ষতি হওয়ায় ফুলের দাম ছিল আগুন। এদিন প্রতিমার দামও ছিল মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। একেবারে ছোট প্রতিমা ১৫০টাকা, এক ফুটের প্রতিমা ২৫০-৩০০টাকা, দু’ফুটের প্রতিমা ৬০০-৬৫০টাকা এবং আড়াই থেকে তিন ফুটের প্রতিমা ৮৫০ থেকে এক হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাঁকুড়ার মাচানতলার প্রতিমা বিক্রেতা শ্যামল পাল বলেন, নদীয়া থেকে প্রতিমা আমদানি করতে হয়েছে। তাই দাম একটু বেশি। এদিন কিছু খদ্দের দাম শুনে চলে যাচ্ছেন। তবে বুধবার সারাদিন পড়ে রয়েছে। আশা করি সমস্ত প্রতিমাই বিক্রি হয়ে যাবে।
  • Link to this news (বর্তমান)