• আউশগ্রামে মিরশা ও ছোট রামচন্দ্রপুরে শতবর্ষপ্রাচীন লক্ষ্মীপুজো ঘিরে উন্মাদনা
    বর্তমান | ১৬ অক্টোবর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, মানকর: পূর্ব বর্ধমানের গ্রামাঞ্চলে এমন বহু লক্ষ্মীপুজো হয়, যেগুলি বহু বছরের পুরনো। প্রাচীন রীতি মেনে এখনও সেই পুজো হয়। আউশগ্রামও তার ব্যতিক্রম নয়। এখানকার মিরশা গ্রামের মণ্ডলবাড়ির ও ছোট রামচন্দ্রপুরে অধিকারী বাড়ির লক্ষ্মীপুজো ১০০ বছরের বেশি পুরনো।

    তৎকালীন জমিদার সুবোধকুমার শ্রীমানীর কাছ থেকে মণ্ডল বংশের পূর্বপুরুষরা মিরশা অঞ্চলটি কিনেছিলেন। তারপর থেকে লক্ষ্মীপুজো শুরু করেন। এই পরিবারের পূর্বপুরুষ সতীশচন্দ্র মণ্ডলের বাবা এই জমিদারি কেনেন। সতীশচন্দ্রকে ‘গণ’ উপাধি দেন তৎকালীন জমিদার।

    পরিবারের সদস্যরা জানান, মণ্ডল পরিবারের কুলদেবতা নারায়ণ। কিন্তু দেবতার পুজো করেও তাঁদের পূর্বপুরুষদের মনে শান্তি ছিল না। সেসময় তাঁদের এক পূর্বপুরুষ দেবী লক্ষ্মীর স্বপ্নাদেশ পান। সেই থেকে মণ্ডলবাড়িতে লক্ষ্মীপুজো শুরু হয়। এখানে মা লক্ষ্মীর সঙ্গে দুই সখী জয়া ও বিজয়া থাকেন।

    পরিবারের সদস্য নন্দদুলাল মণ্ডল বলেন, নতুন ধানের শীষ দিয়ে দেবীকে বরণ করা হয়। দেবীকে শীষ অর্পণ না করা পর্যন্ত মাঠের ধান কাটা হয় না। আবহাওয়া প্রতিকূল হলেও এই রীতি মেনে চলা হয়। নবকুমার মণ্ডল, সন্দীপ মণ্ডলরা জানালেন, বংশপরম্পরায় একটি পরিবার তাঁদের বাড়িতে পুজো করে আসছে। পূজারীকে জমি দেওয়া আছে। প্রতিমাশিল্পী অজয় রক্ষিতও বংশ পরম্পরায় এই কাজ করছেন।

    ভক্তদের প্রসাদের জন্য তিলের নাড়ু ব্যবহার করা হয়। কেনা নাড়ু দেবীর ভোগে দেওয়া হয় না। তাই বাড়িতে নাড়ু বানাতে হয়। মণ্ডল পরিবারে এখন ২৮ শরিক। কর্মসূত্রে অনেকে বাইরে থাকলেও লক্ষ্মীপুজোয় সবাই ঘরে ফেরেন। স্থানীয়রা জানান, পুরো গ্রাম মণ্ডলবাড়ির লক্ষ্মীপুজোয় আনন্দে মেতে ওঠে। অন্নকূটে সারা গ্রামের মানুষ দেবীর প্রসাদ পায়। ফি বছর এক হাজারের বেশি মানুষকে প্রসাদ বিলি করা হয়।আউশগ্রামের ছোট রামচন্দ্রপুরে জয়রাম অধিকারীর পরিবারের লক্ষ্মীপূজো ১০০ বছরেরও বেশি প্রাচীন। পরিবারের বর্তমান সদস্য বিজু অধিকারী বলেন, একসময় পরিবারে অর্থসঙ্কট নেমে এসেছিল। সেসময় পুরোহিতের বিধানে লক্ষ্মীপুজোর শুরু হয়। প্রাচীন রীতি মেনে এখনও পুজোর দিন বহু মানুষকে প্রসাদ দেওয়া হয়। দেবীর পুজোয় অন্য নৈবেদ্যর সঙ্গে নাড়ু দেওয়ার রীতি রয়েছে।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)