• তরুণী চিকিৎসকের খুন-ধর্ষণে আর কারা জড়িত?  মোবাইলের কল রেকর্ডিং কাটাছেঁড়া করতে নাজেহাল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা
    বর্তমান | ১৬ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি করে তরুণী চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের তদন্তে সিভিক সঞ্জয় বাদে আর কারা রয়েছে তা খুঁজে বের করতে নাজেহাল অবস্থা সিবিআইয়ের। অন্যদের উপস্থিতি প্রমাণ করতে প্রযুক্তির আশ্রয় নিয়েও একটা বৃত্তের মধ্যে আটকে গিয়েছে তারা। রহস্যভেদে  একাধিক সন্দেহভাজনের বিগত ছ’মাসের মোবাইলের কল রেকর্ডিং কাটাছেঁড়া করতে গিয়ে আরও তথৈবচ অবস্থা এজেন্সির কর্তাদের। হাজারো কলের মধ্যে থেকে খুন ও ধর্ষণের পরিকল্পনা নিয়ে কথোপকথন খুঁজে বের করা রীতিমতো কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁদের কাছে।

    মঙ্গলবারও শীর্ষ আদালতে সিবিআই জানিয়েছে, খুন ও ধর্ষণ কাণ্ডে সঞ্জয় ছাড়া আর কারা জড়িত রয়েছে, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। আর এখানেই এজেন্সির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর আগে রাজ্যে একাধিক মামলায় প্রথম চার্জশিট জমা দেবার পর এজেন্সি বারবার আদালতে দাবি করে এসেছে, মূল জায়গায় পৌঁছতে তাদের তদন্ত চলছে। বছরের পর বছর চলে গিয়েছে। কিন্তু আজও  সিবিআই সেই সমস্ত ঘটনার তদন্ত শেষ করে উঠে পারেনি। স্বাভাবিকভাবেই আর জি করে অভয়া খুনের ঘটনায় অন্য কারা জড়িত, তা জানতে এজেন্সি কতদিন সময় লাগাবে, তাই নিয়ে সকলের মনেই কৌতুহল তৈরি হয়েছে। আদৌ কি তারা বের করতে পারবে? প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে বিভিন্ন মহলে।

    মামলা হাতে নেওয়ার পর সিবিআই তেড়েফুঁড়ে তদন্ত শুরু করেছিল। তাদের হাবভাব দেখে মনে হচ্ছিল খুব শীঘ্রই নতুন ক্লু বের করে আনতে পারবে। সিভিক সঞ্জয় বাদে কারা ধর্ষণ ও খুনে জড়িত রয়েছে, তা অনায়াসে এজেন্সি বলে দেবে। রহস্যভেদে হাসপাতালের একাধিক জুনিয়ার-সিনিয়র ডাক্তার, ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক, নার্স ও  নিরাপত্তারক্ষীকে জেরা করা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। প্রথম  চার্জশিট জমা পড়ার পর অনেকটাই ধীর হয়ে গিয়েছে তাদের তদন্ত প্রক্রিয়া। যদিও এই যুক্তি মানতে নারাজ কেন্দ্রীয় এজেন্সির কর্তারা। তদন্তকারী টিমের এক সিনিয়র আধিকারিকের কথায়, জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনের ঘটনায় বেশ কয়েকজনের নাম তাঁরা পেয়েছেন। সে সংক্রান্ত প্রমাণ জোগাড় এখনও চলছে। এক্ষেত্রে ষড়যন্ত্রের বিষয়টি তাঁদের তদন্তে  গুরুত্ব পাচ্ছে। সেই কারণে সন্দেহভাজনদের সঙ্গে সন্দীপ ঘোষের কী কথাবার্তা হয়েছিল, ছয় মাসের কল রেকর্ডিং বের করা হয়েছে। সেটাই সফ্টওয়্যারে  ফেলে বারবার শোনা হচ্ছে। কিন্ত তাতেও নতুন দিশা এখনও দেখতে পাননি তদন্তকারীরা। সিবিআই সূত্রে খবর, দশ-বারোজনের কল রেকর্ডিংয়ের কাটাছেঁড়া চলছে। কিন্তু ছমাস ধরে তাঁদের এক একজন, কয়েকহাজার বার মোবাইলে কথা বলেছেন। এই ভিড়ে আসল জিনিসই হারিয়ে যাচ্ছে। রেকর্ডিং থেকে এখনও তদন্তকারীরা বের করে উঠতে পারেননি, তরুণী চিকিৎসককে খুনের পরিকল্পনা নিয়ে ঠিক কী কথা হল। তাই সিবিআইয়ের এই কৌশল কতটা কাজে দেবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।    
  • Link to this news (বর্তমান)