• রাজ্যের ৬ আসনে উপ নির্বাচন ১৩ নভেম্বর, মহারাষ্ট্র-ঝাড়খণ্ডেও বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা
    বর্তমান | ১৬ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: দুই রাজ্যের বিধানসভা ভোটের সঙ্গেই হবে বাংলার ছ’টি আসনের উপ নির্বাচন। মঙ্গলবার সেই দিনক্ষণ ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন। ঝাড়খণ্ডে ভোটগ্রহণ হবে দু’দফায়, আগামী ১৩ এবং ২০ নভেম্বর। তবে মহারাষ্ট্রে আগামী ২০ নভেম্বর মাত্র একটি দফাতেই ভোটগ্রহণ। এই দুই দিনেই দেশের ১৫টি রাজ্যের ৪৭টি বিধানসভা এবং দু’টি লোকসভা কেন্দ্রে উপ নির্বাচন হবে। এই তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ছ’টি বিধানসভা আসন— সিতাই, মাদারিহাট, নৈহাটি, হাড়োয়া, মেদিনীপুর, তালডাংরা। সব ভোটের ফল প্রকাশিত হবে আগামী ২৩ নভেম্বর। আর জি কর কাণ্ডের প্রেক্ষিতে এবার এই উপ নির্বাচন রাজনৈতিকভাবে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। গত জুন মাসে লোকসভা ভোটের ফলে সব হিসেব উল্টে তৃণমূল কংগ্রেস একাই পেয়েছে ২৯ আসন। পরের মাসেই বিধানসভার উপ নির্বাচনে চারটি আসনেই তারা জয়ী হয়। এবার ডাক্তারদের আন্দোলনের প্রভাব কি ইভিএমে পড়বে? নাকি ভোটব্যাঙ্ক এখনও অটুট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের? তৃণমূল যদি পুনরায় জয়ী হয়, তাহলে সবথেকে বেশি ধাক্কা খাবে সরকারবিরোধী আন্দোলন। তাই বিরোধীদের কাছে এই উপ নির্বাচন অগ্নিপরীক্ষা।

    যদিও এই নির্বাচনী নির্ঘণ্ট বিতর্কমুক্ত নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর আগে বারবার অভিযোগ করেছেন যে, কেন্দ্রীয় সরকার হোক বা নির্বাচন কমিশন, সকলেই বাংলার সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করে। এদিন সেই অভিযোগের সারবত্তা স্পষ্ট হল। মহারাষ্ট্রে বিধানসভার আসন সংখ্যা ২৮৮। পশ্চিমবঙ্গে ২৯৪। বাংলাকে বেশ কিছু বছর আগেই মাওবাদী উপদ্রুত রাজ্যগুলির তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কিন্তু মহারাষ্ট্র এখনও সেই তালিকার অন্তর্গত। সেই রাজ্যে মাত্র এক দফায় ভোটগ্রহণ! অথচ ২০২১ সালে সুরক্ষার কারণ দেখিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছিল আট দফায়। এমন পক্ষপাত কেন? 

    লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর থেকে মোদি ম্যাজিক ফিকে হওয়া নিয়ে জল্পনা ছিল তুঙ্গে। মহারাষ্ট্রে উদ্ধব থ্যাকারে এবং শারদ পাওয়ারের দল ভাঙিয়ে সরকার ফেলে দেওয়ার সুফল বিজেপি পায়নি। কিন্তু সদ্য হরিয়ানায় জয় এসেছে। এবার অন্য দুই রাজ্যে জয়ী হয়ে হৃতসম্মান ফিরে পেতে মরিয়া মোদি। পক্ষান্তরে বিরোধী মহাজোট ইন্ডিয়ার এবার প্রমাণ করার সময় যে, মহারাষ্ট্রে লোকসভা ভোটের ভালো ফল নিছক ব্যতিক্রম নয়। হারানো সরকার ফিরে পেতে তাই ঝাঁপাবে কংগ্রেস, শিবসেনা (উদ্ধব) এবং পাওয়ারের এনসিপি জোট। শিবসেনার প্রকৃত উত্তরাধিকারী যে তিনিই, সেটা প্রমাণ করার দায় রয়েছে উদ্ধবের।

    ঝাড়খণ্ডে হেমন্ত সোরেন অপেক্ষা করছেন জেলে পাঠানোর উপযুক্ত জবাব দেওয়ার জন্য। তাঁর অন্যতম পুঁজি উপজাতিদের সহানুভূতি ভোটব্যাঙ্ক। পাল্টা বিজেপির ইস্যু অনুপ্রবেশ। মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ডে ‘ইন্ডিয়া’ জয়ী হলে, আগামী দিনে বিরোধী মহাজোট আরও শক্তিশালী হবে। আর মোদি চাইবেন, কোনওভাবেই যেন মহারাষ্ট্র হাতছাড়া না হয়। কেন? দেশের অর্থনৈতিক রাজধানী দখলে রাখতে না পারলে দিল্লির আসনও যে পোক্ত থাকবে না!   
  • Link to this news (বর্তমান)