রাস্তায় চাপ কমাতে এ বার জলপথে পণ্য পরিবহণের পরিকল্পনা
এই সময় | ১৬ অক্টোবর ২০২৪
এই সময়: যতদিন যাচ্ছে রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে। সেই চাপ সামাল দেওয়ার জন্যে রাস্তার পরিসর যতটা বাড়ানো দরকার, সেটা বাস্তবে সম্ভব নয়। তাই বিকল্প হিসাবে জলপথকেই এখন পাখির চোখ করছে রাজ্য সরকার। জলপথে পণ্য পরিবহণ কী ভাবে আরও বাড়ানো যায়—তার রূপরেখা তৈরি করতে বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় ‘লজিস্টিক মাস্টার প্ল্যান’ বানাচ্ছে রাজ্য সরকার।নবান্ন সূত্রের খবর, ২০৫০ সালে রাজ্যের জনসংখ্যা কোন জায়গায় পৌঁছতে পারে, তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই কলকাতা মেট্রোপলিটান এলাকায় জলপথ পরিবহণকে আরও আধুনিক করার পরিকল্পনা হয়েছে। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে প্রকল্প রূপায়ণ করবে পরিবহণ দপ্তর।
পরিবহণ দপ্তরের এক শীর্ষকর্তার ব্যাখ্যা, রাজ্যে শিল্প-বাণিজ্যের সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে অপ্রতুল পরিবহণ পরিকাঠামো। দিনকে দিন গাড়ির সংখ্যা বাড়লেও রাস্তা সে ভাবে বাড়ছে না। আর কয়েক বছরের মধ্যে চালু হতে যাচ্ছে ইস্টার্ন ফ্রেট করিডর। যার অন্যতম কেন্দ্রস্থল হলো হুগলির ডানকুনি। এর ফলে কলকাতা মেট্রোপলিটান এলাকায় পণ্য পরিবহণের পরিমাণ আরও বাড়বে। কলকাতার জলপথকে ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারলে সেই চাহিদা অনেকটাই মেটানো যাবে। তাতে পণ্য পরিবহণের খরচও কমবে। তার জন্যে বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে দিয়ে একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করছে সরকার। সেই মতো কলকাতা এবং তার আশপাশে জলপথ পরিবহণকে ঢেলে সাজানো হবে।
সরকারি পরিকল্পনা অনুযায়ী, কলকাতা মেট্রোপলিটান এলাকায় জলপথে কোন কোন পণ্য নিয়ে যাওয়া যেতে পারে—সেগুলিকে প্রথমে চিহ্নিত করা হবে। পণ্য পরিবহণে কী ধরনের জলযান ব্যবহার করা যেতে পারে—তারও তালিকা তৈরি করা হবে। কলকাতার জলপথে পণ্য পরিবহণ বাড়াতে গেলে কী ধরনের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন (ডিজিটাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার-সহ) দরকার, সেটাও অনুসন্ধান করে দেখবে বিশেষজ্ঞ সংস্থা।
পরিকাঠামো তৈরি ও উন্নয়নে আনুমানিক কত টাকা খরচ হতে পারে, সেই টাকা কোথা থেকে আসবে—তারও রূপরেখা থাকবে মাস্টার প্ল্যানে। রাস্তায় দূষণ কমাতে ব্যাটারি অথবা ইলেকট্রিক চালিত গাড়ি কিংবা বায়ো-ডিজেল চালিত গাড়ির ব্যবহার কী ভাবে বাড়ানো যায় এবং কলকাতা বন্দর থেকে জলপথে কী ভাবে অন্যত্র পণ্য পরিবহণ করা যায়—তারও দিকনির্দেশ থাকবে মাস্টার প্ল্যানে।
রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘জলপথে পণ্য পরিবহণ বাড়াতে আমরা সুন্দরবনের মতো প্রত্যন্ত জায়গায় রো-রো ভেসেল পরিষেবা চালু করেছি। অনেক নতুন জেটি তৈরি হচ্ছে। রাস্তায় যে ভাবে গাড়ির চাপ বাড়ছে তাতে জলপথই বিকল্প। তার জন্যেই লজিস্টিক মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হচ্ছে।’