• মেয়ের ঘটনায় পুলিশই তথ্য প্রমাণ লোপাটে সাহায্য করেছে: আরজি করের নির্যাতিতার মা
    হিন্দুস্তান টাইমস | ১৬ অক্টোবর ২০২৪
  • ফের একবার সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আরজি করের নির্যাতিতার মা-বাবা। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে তোপ দেগে তাঁদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী কার্নিভালে ব্যস্ত। তবে এতদিন ধরে যে চিকিৎসকরা অনশন করছেন, সেই সমস্যা সমাধানের সময় নেই তাঁর কাছে। আর এরই সঙ্গে নিজের মেয়ের খুনের ঘটনায় পুলিশকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে নির্যাতিতার মা বলেন, 'পুলিশই আমার মেয়ের খুনের ঘটনায় তথ্য প্রমাণ লোপাটে সাহায্য করেছে।'

    দ্রোহের কার্নিভাল নিয়ে হাই কোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলে নির্যাতিতা চিকিৎসকের মা বলেন, 'ছাত্ররা তো অন্যায় আন্দোলন করছে না। এটা তো উদ্বেগের। ওরা অসুস্থ হচ্ছে। কতদিন না খেয়ে থাকবে ওরা। তবে এটা বলব ওরা যাতে হটকারী সিদ্ধান্ত না নেয়। রিলে করে অনশন করুক। আর মুখ্যমন্ত্রী দ্রোহ কার্নিভাল চেয়েছিলেন বন্ধ করতে পারেননি। হাইকোর্ট অর্ডার দিয়েছে। পুলিশই ব্যারিকেড দিয়েছিল। পুলিশই সরিয়েছে। এটা লজ্জা। পুলিশই আমার মেয়ের ঘটনায় তথ্য প্রমাণ লোপাটে সাহায্য করেছে।'

    আরজি কর কাণ্ডে ধৃত সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে প্রমাণ সাজিয়ে ৪৫ পাতার চার্জশিট তৈরি করেছে সিবিআই। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, চার্জশিটে সঞ্জয় ছাড়া আপাতত আর কারও নাম নেই।এই আবহে গতকাল সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর কাণ্ডের শুনানিতে তদন্ত নিয়ে স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিল সিবিআই। মঙ্গলবার সুপ্রিম শুনানির সময় সিবিআইয়ের জমা দেওয়া স্টেটাস রিপোর্টে চার্জশিটের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। সঙ্গে চার্জশিটের একটি কপিও জমা দেওয়া হয়েছে প্রধান বিচারপতি বেঞ্চে। সেই রিপোর্টে আপাতত ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের নাম রয়েছে। তবে খুনের ঘটনায় আর অন্য কেউ জড়িত আছে কি না, সেই সম্ভাবনা এখনও ওড়ায়নি সিবিআই। এই আবহে জানানো হয়েছে, অন্য কেউ এই ধর্ষণ-খুন মামলায় জড়িত কি না, তা জানতে এখনও তদন্ত জারি রাখা হয়েছে। এদিকে ফের তিন মাস পর এই সংক্রান্ত স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিতে সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

    চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজ প্রথম প্রমাণ, যা থেকে জানা গিয়েছে, গত ৯ অগস্ট ভোরে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চারতলায় গিয়েছিল সঞ্জয় রায়। সঞ্জয়ের মোবাইল টাওয়ার লোকেশন দ্বিতীয় প্রমাণ। তা নিশ্চিত করেছে যে সেই রাতে সঞ্জয় আরজি করেই ছিল। এদিকে তৃতীয় প্রমাণ হল ডিএনএ। খুন হওয়া চিকিৎসকের দেহে মেলা ডিএনএ-র সঙ্গে মিলে গিয়েছে সঞ্জয়ের ডিএনএ। এদিকে চার্জশিটে উল্লেখিত চতুর্থ প্রমাণ হল, সঞ্জয়ের বাজেয়াপ্ত পোশাকে রক্তের দাগ মিলেছে।

    এদিকে পঞ্চম প্রমাণ হল ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া ছোট ছোট চুল। সেগুলি সঞ্জয়ের বলে জানিয়েছে সিবিআই। ষষ্ঠ প্রমাণ ব্লুটুথ ইয়ারফোন, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়। সেটি সঞ্জয়ের ফোনের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল বলে জানানো হয়েছে সিবিআইয়ের তরফ থেকে। সঞ্জয়ের শরীরে মেলা ক্ষতচিহ্ন হল সপ্তম প্রমাণ। অভিযুক্তের শরীরে যে ক্ষতচিহ্ন মিলেছে, সেগুলি নির্যাতিতার প্রতিরোধের ফলেই তৈরি হয়েছিল। অপরদিকে সিবিআইয়ের তরফ থেকে চার্জশিটে বলা হয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া মৃতার অন্তর্বাস পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে তা জোরজবরদস্তি খোলার চেষ্টা করা হয়েছিল, যার জেরে তা ছিঁড়ে যায়। এদিকে অভিযুক্তের মেডিক্যাল পরীক্ষা থেকে এ রকম কোনও প্রমাণ মেলেনি যে, তিনি সঙ্গমে অক্ষম। ঘটনাস্থল থেকে যে বীর্য এবং লালারস মিলেছিল, তা ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারেরই।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)