মহিলা পরিচালিত একটি পুজো হয় কৃষ্ণনগরের রামকৃষ্ণপাড়ায়। প্রতিমা বিসর্জন হয়ে গিয়েছে। ফলে ফাঁকাই পড়েছিল পুজো মণ্ডপ। আর সেই ফাঁকা মণ্ডপেই মিলল বছর আঠারোর এক তরুণীর লাশ। তরুণীর শরীরে কোনও পোশাক ছিল না। মুখ আ্যাসিড বা অন্যকিছু দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে চেনার কোনও উপায় নেই। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে প্রমাণ লোপাট করতেই মুখ-সহ দেহের সামনের অংশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ধর্ষণ হয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
দেহ মারাত্মভাবে পুড়ে যাওয়ায় তরুণীকে চিহ্নিত করতে বেগ পেতে হচ্ছে। স্থানীয় এক মহিলা বলেন, সকালে দেখলাম একটি মেয়ে মণ্ডপে পড়ে রয়েছে। এলাকার মেয়ে নয় বলেই মনে হচ্ছে। পুলিস ওই লাশের ছবি বিভিন্ন থানায় পাঠিয়েছে।
ঘটনাস্থল থেকে হাফ কিলোমিটার দূরে থানা। প্রায় একশো মিটার দূরে ডিএম অফিস, দেড়শো মিটার দূরে এসপি অফিস। পাশেই রয়েছে রামকৃষ্ণ আশ্রম, রামকৃষ্ণ স্কুল। কেউ কি টের পেল না! এরকম এক জায়গায় কীভাবে এমন ঘটনা ঘটলা তা বুঝতে পারছেন না স্থানীয়রা। প্যান্ডেলের একটি অংশ পুড়ে গিয়েছে। ফলে মনে করা হচ্ছে সম্ভবত প্যান্ডেলেই তরুণীর দেহে আগুন দেওয়া হয়েছে। সকালেই এলাকায় অনেক মহিলা পরিচারিকার কাজ করতে আসেন। তারাই প্রথম লক্ষ্য করে স্থানীয়দের খবর দেন।
ওই ঘটনা নিয়ে বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, খুনি রাজ্যে অতীতেও ছিল। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস আজ পশ্চিমবঙ্গকে যে পরিস্থিতিতে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে তাতে একটি দুর্গাপুজোর মণ্ডপে এক তরুণীকে অ্যাসিডে পুড়িয়ে ফেলে রেখে যাওয়া হচ্ছে। এটাকে কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মনে করলে চলবে না। পাঁচালায় পুজো মণ্ডপ ধংস করে দেওয়া হয়েছে। দুষ্কৃতীরা মনে করছে তাদের কিছু হবে না।
এনিয়ে আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, এটা বিভত্স ঘটনা। এমন ঘটনা রাজ্যে কেউ দেখেনি। এর সঙ্গে পুজো কমিটির লোক জড়িত। থানা পুলিস হয়তো এই ঘটনাকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করবে কিন্তু পুজো মণ্ডপে এই ঘটনা হয়ে থাকলে পুজোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। পুজো কমিটির লোকজনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসবাদ করা উচিত।