এই সময়, আলিপুরদুয়ার: হেরোইন, ব্রাউন সুগার ও কোকেনের পরে এই প্রথম নিষিদ্ধ ‘সান ফ্লাওয়ার’ ড্রাগের হদিশ মিলল আলিপুরদুয়ার শহরে। যার চলতি নাম ‘সাবুন পাউডার’। শহরের একটি বিলাসবহুল হোটেলে বারের কর্মী হওয়ার সুযোগ নিয়ে এক যুবক ওই নিষিদ্ধ ড্রাগের রমরমা কারবার খুলে বসেছিল বলে অভিযোগ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে নড়েচড়ে বসে পুলিশ। সন্দেহভাজন ওই যুবককে রেইকি করা শুরু করে জেলা পুলিশের বিশেষ একটি দল।পুলিশের তদন্তে উঠে আসে, শহরের উঠতি বয়সের যুবকযুবতীদের অনেকে না-জেনে ওই নিষিদ্ধ ড্রাগের নেশায় আচ্ছন্ন। সরকারি ছাড়পত্র থাকায় ওই বারে ঢুকে অভিযানও করতে পারছিল না পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে কোচবিহারের তুফানগঞ্জ থানার ধলপল থেকে একটি স্কুটিতে চেপে আলিপুরদুয়ারের ভাটিবাড়ি হয়ে শহরের দিকে ফিরছিল অভিযুক্ত।
শহর লাগোয়া ভোলারডাবরির বাসিন্দা রাজীব সরকারকে ক্রেতা সেজে টোপ ফেলে জেলা পুলিশের একটি বিশেষ দল। কিন্তু তার সন্দেহ হওয়ায় সে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। শেষ পর্যন্ত দু’কিলোমিটার ধাওয়া করে গ্রেপ্তার করা হয় ওই যুবককে। তার হেফাজত থেকে লক্ষাধিক টাকার নিষিদ্ধ ‘সান ফ্লাওয়ার’ ড্রাগ উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য মণিপুর ও নাগাল্যান্ড থেকে কোচবিহার হয়ে আলিপুরদুয়ার শহরে ওই নেশার সামগ্রী আমদানি করত ধৃত যুবক। একবার ওই নেশায় কেউ আক্রান্ত হয়ে পড়লে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাটা খুবই কঠিন বলে জানতে পেরেছেন পুলিশ কর্তারা। ওই নিষিদ্ধ ড্রাগের কোনও গন্ধ নেই। দেখতে খুবই সরু সাদা আঁশের মতো। ফলে কাগজের ছোট প্যাকেটে রেখে দিলে টের পাওয়া কঠিন।
একবার ওই নেশার খপ্পরে পড়লে যেভাবেই হোক টাকা জোগাড় করতে মরিয়া হয়ে ওঠে আক্রান্তরা। নেশার পর শরীরেও কোন বাহ্যিক পরিবর্তন আসে না বলে অভিভাবকদের পক্ষে প্রথম দিকে টের পাওয়া খুবই কঠিন হয়। পরে স্নায়ুঘটিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে নেশায় আক্রান্তরা।
জেলা শহরে ‘সান ফ্লাওয়ার’ এর মতো নিষিদ্ধ ড্রাগের কারবারের তথ্য উঠে আসায় উদ্বিগ্ন পুলিশকর্তারা। আজ, বুধবার ধৃতকে আলিপুরদুয়ার জেলা আদলতে পেশ করে ১৪ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানাবে পুলিশ। জেলার পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবমশী বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছি আমরা। এখন ওই চক্রের বাকি চাঁইদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করা হবে।’