মৃত্যুঞ্জয় দাস: একসময়ে বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাঁটি ব্লকের রামকানালি গ্রাম ছিল জঙ্গলেঘেরা। তাই হাতির দল হানা দিত ফসলের জমিতে,আবার কখনো গ্রামে। হাতির এই তাণ্ডবে ক্রমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল গোটা গ্রাম। তা থেকে বাঁচতেই কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর সময়ে শুরু গজরাজের পুজো।
এই গ্রামে প্রধান জীবিকা বলতে ছিল চাষবাস। কিন্তু সারা বছর ধরে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে চাষবাস করে মাঠের ফসল বাড়িতে তুলতে পারতেন না গ্রামের কৃষকরা। শয়ে শয়ে হাতির দল মাঠের ফসল খেয়ে ও তা পায়ে মাড়িয়ে নষ্ট করে দিত। তাই মাঠের লক্ষ্মী ও বনের গজরাজ-- উভয়কে বাঁচাতেই এ গ্রামে শ বছর আগে শুরু হয় গজলক্ষ্মীর আরাধনা।
বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় রেঞ্জের জঙ্গলঘেরা গ্রাম রামকানালি। সব মিলিয়ে গ্রামে বসবাস প্রায় পঞ্চাশটি পরিবারের। সকলেই প্রায় কৃষিজীবী। এ গ্রামে দুর্গাপুজো হয় না। এ গ্রামের সবথেকে বড় উৎসব লক্ষ্মীপুজোই। লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে কোজাগরী পূর্ণিমায় আত্মীয়-স্বজনে ভরে ওঠে এ গ্রামের প্রতিটি বাড়ি।
রুজিরুটির প্রয়োজনে যাঁরা সারা বছর গ্রামের বাইরে থাকেন, তাঁরাও এসময়ে গ্রামে ফিরে আসেন। তিন-চার দিন ধরে চলে উৎসব । তবে এই গ্রামে প্রতিমা থেকে শুরু করে পুজোর রীতিনীতি আর পাঁচটা লক্ষ্মী পুজো থেকে একেবারেই আলাদা। এখানে লক্ষ্মীর বাহন পেঁচা নয়, হাতি! গজরাজের উপর বিরাজ করেন লক্ষ্মী!