• সামান্য টাকা দিলেই মিলছে দামী গাছ কাটার অনুমতি, তদন্তর নির্দেশ ডিএফও-র, ক্ষুব্ধ বনমন্ত্রীও
    আজকাল | ১৬ অক্টোবর ২০২৪
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে বিনা অনুমতিতে একের পর এক কাটা হচ্ছে শতাব্দীপ্রাচীন আমগাছ। উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের আক্রামপুরের ঘটনা। বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখাতেই ঘটনাস্থলে আসেন বনদপ্তরের আধিকারিকরা। নামমাত্র জরিমানা নিয়ে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েই রেঞ্জার জমি মাফিয়াদের গাছ কাটার অনুমতি দিয়ে গিয়েছেন। তারপর থেকে বাসিন্দারা ক্ষোভে ফুঁসছেন। খবর পৌঁছয় বিভাগীয় বন আধিকারিকের কাছে। তিনি রেঞ্জারকে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন। রেঞ্জারের 'কীর্তি'তে ক্ষুব্ধ বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাও। তিনিও ঘটনাটি খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।

    হাবড়া পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের আক্রামপুরে কয়েক একর জমির ওপর শতাব্দীপ্রাচীন একটি আমবাগান রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওই বাগানের আমগাছগুলোর বয়স একশো বছরেরও বেশি। বাগানের জমির মালিকানা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। আর সেই সুযোগে সেখানে জমি মাফিয়ারা ঢুকে পড়েছে। তাদের মধ্যস্থতায় ওই বাগানের জমি প্লট করে বিক্রি করা চলছে। অভিযোগ, জমি মাফিয়ারাই বাগানের আমগাছগুলো কেটে বিক্রি করে দিচ্ছে। দুর্গাপুজোর মহাষষ্ঠীর দিন জমি মাফিয়ারা লোকজন নিয়ে একটি আমগাছ কাটা শুরু করে। স্থানীয় বাসিন্দারা তখন সেখানে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন বনদপ্তরের বারাসতের রেঞ্জার ভাস্করজ্যোতি পাল। হাবড়া থানা থেকে পৌঁছয় পুলিশও। অভিযোগ, জমি মাফিয়ারা ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকার পরেও রেঞ্জার তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেননি। উলটে বাসিন্দারা গাছ কাটা নিয়ে কেন বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন। বনদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী বিনা অনুমতিতে গাছ কাটা হলে গাছের দামের দ্বিগুণ মূল্য জরিমানা করা হয়। একশো বছরের প্রাচীন আমগাছ কাটা হলেও রেঞ্জার জমি মাফিয়াদের মাত্র ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দিয়েছেন। সঙ্গে তাঁদের গাছ কাটার অনুমতিও তিনি দিয়ে গিয়েছেন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, জমি মাফিয়াদের সঙ্গে রেঞ্জারের গোপন সমঝোতা হয়েছে। তাই, নামমাত্র জরিমানা নিয়ে তিনি তাঁদের গাছে কাটার অনুমতি দিয়েছেন।

    স্থানীয় কাউন্সিলর সঞ্জয় দাস ঘটনার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। বেআইনিভাবে গাছ কাটার প্রতিবাদে বনবিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি অভিযোগ করেছেন। বেআইনিভাবে গাছ কাটার অনুমতি দেওয়া সম্পর্কে রেঞ্জার ভাস্করজ্যোতি বলেন, 'আমি যা করেছি, ঠিক করেছি। বাসিন্দারা যেখানে খুশি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারেন। আমি তাতে পরোয়া করি না।'

    উত্তর ২৪ পরগনার বিভাগীয় বন আধিকারিক অভিজিৎ কর বলেন, 'হাবড়া পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে বেআইনিভাবে গাছ কাটার অভিযোগ পেয়েছি। জীবন্ত গাছ কাটার অনুমতি এভাবে দেওয়া যায় না। রেঞ্জারকে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। উত্তর সন্তোষজনক না-হলে বিভাগীয় পদক্ষেপ করা হবে।' বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাও রেঞ্জারের 'কীর্তি'তে ক্ষুব্ধ।
  • Link to this news (আজকাল)