• দুর্গাপুজো ভাল কাটেনি সৈকতনগরীর জেলায়, বন্যায় সব হারিয়ে বিষাদে কাটল উৎসব
    হিন্দুস্তান টাইমস | ১৭ অক্টোবর ২০২৪
  • দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বন্যা দেখা যায়। একদিকে নাগাড়ে বৃষ্টি অপরদিকে ডিভিসির ছাড়া জল বানভাসি পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, মেচেদা সর্বত্র হাহাকার শোনা যাচ্ছিল। দুর্গাপুজো যে ভাল কাটবে না সেটা বোঝাই যাচ্ছিল। এইসব এলাকার বাসিন্দারা দুর্গাপুজোয় মেতে উঠতে পারেননি আনন্দে। কারণ উৎসবের আবহে তাঁদের যে সব হারিয়ে গিয়েছে প্রকৃতির ভয়াল গ্রাসে। গ্রামীণ অর্থনীতি জোর ধাক্কা খেয়েছে। তাই অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছর দুর্গাপুজো বন্যা কবলিত এলাকায় আনন্দঘন হয়ে ওঠেনি।

    জলস্ফিতির জেরে কংসাবতী নদী বাঁধের চারটি জায়গা ভেঙে যায়। তার জেরেই গোটা পাঁশকুড়া জলের তলায় চলে যায়। বন্যার জেরে বাড়ির ক্ষতি হয়েছে মোট ৫০০টি। এমন আবেদনই জমা পড়েছে ব্লক প্রশাসনে। রাস্তার ক্ষতিও হয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা। এখনও জলমগ্ন রয়েছে পাঁশকুড়ার একাধিক গ্রাম। বাঁধ যখন ভেঙে যায় তার পরেই ছিল দুর্গাপুজো। সুতরাং সবটা সামলে উঠতে পারেননি দুর্গত বাসিন্দারা। তাই দুর্গাপুজোতে ভালভাবে অংশ নিতে পারেননি। অন্যান্য বছর দুর্গাপুজোর চারদিন পাঁশকুড়া এলাকার মণ্ডপগুলিতে উপচে পড়ে ভিড়ে। এবার তা দেখা যায়নি।

    পূর্ব মেদিনীপুরের গ্রামীণ এলাকার মানুষজনের দুর্গাপুজো কেটেছে ঢিমেতালে। পাঁশকুড়া এলাকার বাসিন্দা অচিন্ত্য শাসমল বলেন, ‘এখনও আমার বাড়ির সামনে বন্যার জল রয়েছে। তা সত্ত্বেও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কিছু মণ্ডপে গিয়েছিলাম।’ আর সুকান্ত বেরার কথায়, ‘আমাদের এলাকা ভয়াবহ বন্যা বিধ্বস্ত। এখন জল অনেকটা নেমেছে। এই বন্যার জেরে মানুষজন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আমার বাড়ির সামনের দুর্গাপুজো মণ্ডপে এবার তেমন ভিড় হয়নি। দুর্গাপুজো উদ্যোক্তারা অনুষ্ঠানেও কাটছাঁট করেছেন।’ পরের বছর এমনটা হবে না বলেই আশা করছেন তাঁরা। কারণ ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দুর্গাপুজো পড়েছে। তখন আবহাওয়া ভাল থাকে। তাই আশা করা যাচ্ছে পরের বছর তাঁরা আনন্দ করতে পারবেন।

    পাঁশকুড়া এলাকা কৃষি নির্ভর। আমন ও ফুল চাষের মরসুমে বন্যা হওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাঁশকুড়া ব্লকে প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর আমন চাষ বন্যার জলে নষ্ট হয়েছে। ৫ হেক্টর পান এবং ৩০০ হেক্টর ফুলচাষের ক্ষতি হয়েছে। এক স্টল ব্যবসায়ী বক্তব্য, ‘এবার দুর্গাপুজোয় ভিড় কম হওয়ায় বেচাকেনা ভাল হয়নি। বন্যা আমাদের জীবন–জীবিকায় ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। তাই এবার দুর্গাপুজো মণ্ডপগুলিতে ভিড় অনেক কম হয়েছে। রাজ্য সরকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তা প্রদান করার পরিকল্পনা নিয়েছে।’
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)