• ‘‌এই ১৩ দফা দাবিও বিবেচিত হোক’‌, জুনিয়র ডাক্তারদের পাল্টা প্যাঁচে ফেললেন কুণাল
    হিন্দুস্তান টাইমস | ১৭ অক্টোবর ২০২৪
  • আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। আর এই ঘটনার জেরে দু’‌মাসের বেশি সময় ধরে জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে সিনিয়র ডাক্তাররাও যোগ দিয়েছেন। কর্মবিরতি থেকে শুরু করে আমরণ অনশন এবং পরে দ্রোহের কার্নিভাল করেছেন তাঁরা। আর এবার এবার আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ। এতদিন ১০ দফা দাবি তুলে আসছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। পাল্টা ১৩ দফা দাবি তুললেন কুণাল ঘোষ। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য–রাজনীতিতে। তবে বিষয়টি নিয়ে কেউ মুখ খোলেননি।

    ইতিমধ্যেই সেই ১৩ দফা দাবি ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কারণ কুণাল ঘোষ তা পোস্ট করেছেন এক্স হ্যান্ডেলে। সেখানে কুণাল লেখেন, ‘‌এই ১৩ দফা দাবিও বিবেচিত হোক। ডাক্তাররা কী বলেন?‌’‌ তারপর ধারাবাহিকভাবে ১৩ দফা দাবি ক্রমান্বয়ে তুলে ধরেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা। প্রথমে যখন জুনিয়র ডাক্তাররা পাঁচ দফা দাবি তুলেছিলেন তখন চারটি সঙ্গে সঙ্গে পূরণ করে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর ১০টি দাবি তোলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তখন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ সাংবাদিকদের জানান, ৭টি দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। বাকি তিনটির ক্ষেত্রে সময় লাগবে। সেটা নিয়ে জুনিয়র ডাক্তাররা জানান, মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক করে তাঁরা হতাশ। এবার ১৩ দফা দাবি তুললেন কুণাল। চাপে পড়লেন কি তাঁরা?‌ উঠছে প্রশ্ন।

    এবার যে ১৩ দফা দাবি তোলা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে—১)‌ সব হাসপাতালে ডাক্তারদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হোক। সঙ্গে তাঁদের ডিউটির সময় অনুযায়ী উপস্থিতি, রোগী দেখাটাও সুনিশ্চিত হোক। ২)‌ সরকারি হাসপাতালের কাজ ফেলে, সুবিধা মতো ডিউটি বদলে বাকি সময় প্রাইভেট হাসপাতালে কাজ করা চলবে না। ৩)‌ প্রেসক্রিপশনে একই গুণমানের কম দামি ওষুধের বদলে ওষুধ কোম্পানির প্রভাবে দামি ওষুধ লেখা চলবে না। জেনেরিক টার্মে ওষুধ লিখুন, কোম্পানির ব্র্যান্ড নয়। ৪)‌ ওষুধ ও বিভিন্ন সরঞ্জাম কোম্পানির স্পনসরশিপে অনুষ্ঠান, দেশ–বিদেশে ভ্রমণ চলবে না। ওঁরা সমাজসেবা করেন না। কমিশন, কাটমানির অভিযোগের সুরাহা করতে হবে। ৫)‌ কথায় কথায় নানা পরীক্ষার নামে নির্দিষ্ট ডায়গনস্টিক সেন্টার থেকে কেউ যেন কমিশন না নেন।

    ঠিক কী লিখেছেন কুণাল?‌ এছাড়া আরও বেশ কয়েকটি দাবি কুণাল ঘোষ তুলে ধরেছেন এবং ডাক্তারদের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছেন। এক্স হ্যান্ডেলে কুণাল ঘোষ লেখেন, ‘‌চিকিৎসা ব্যবস্থাকে দুর্নীতি মুক্ত করার কথা বলা হচ্ছে। সেটা করতে হলে তো সবার আগে চিকিৎসকদেরই এগিয়ে আসতে হবে। আশা করব, ওনারা আমার সঙ্গে সহমত হবেন এবং দৃষ্টান্ত তৈরি করবেন। আশা করব, সরকারি হাসপাতালের নিয়ম মেনে চিকিৎসকরা ডিউটি করবেন। প্রাইভেট প্র্যাকটিস করবেন না। কমিশনের জন্য দামি ওষুধ লিখবেন না। বিভিন্ন সংস্থার স্পনসরে বাইরে বেড়াতে যাবেন না। আপনি আচরি ধর্ম, পরেরে শিখাও।’‌ ৬ নম্বর দাবি, ডাক্তারদের ফি যাতে মানুষের নাগালে থাকে সেটার কাঠামো চাই। প্রত্যেককে রশিদ দিতে হবে। ৭)‌ হয় সরকারি, না হলে বেসরকারি বেছে নিন, দুটো একসঙ্গে কোনও নিয়ম দেখিয়ে চলবে না। ৮)‌ সাধারণ মানুষের করের টাকার ভর্তুকিতে যাঁরা সরকারি মেডিকেল কলেজে পড়বেন, তাঁদের সরকারি কাজেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। ৯)‌ স্পেশালিস্ট, সিনিয়রদের ঠিকমত ডিউটি করতে হবে। ১০)‌ কর্মক্ষেত্রকে রোগীবন্ধু রাখার দায়িত্ব সরকারের পাশাপাশি ডাক্তারদেরও নিতে হবে। ১১)‌ বেসরকারি মেডিকেল কলেজে সেমিস্টারে ফেল করিয়ে মোটা টাকার বিনিময়ে পাশের তদন্ত দরকার। ১২)‌ মুখ্যমন্ত্রীর কোটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বন্ধ করেছেন। হাসপাতালের কোটাও বন্ধ করতে হবে। ১৩)‌ চিকিৎসার গাফিলতিতে এফআইআর বাধ্যতামূলক হোক।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)