• বিসর্জনের চারদিন পরও গঙ্গার ঘাটে কাঠামো, ফুল বেলপাতা
    বর্তমান | ১৭ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: বছর বছর একই রোগ। নিরঞ্জন হওয়ার পরেও বহু প্রতিমার কাঠামো দিনের পর দিন ভাসে গঙ্গাতেই। গঙ্গা সংলগ্ন একাধিক শহরে এই অভিযোগ উঠলেও শান্তিপুর যেন সেই তালিকার প্রথম সরিতেই থাকে। তিথি হিসেবে দশমী পেরিয়েছে চারদিন আর উদযাপনের নিরিখে দশমী কেটেছে তিনদিন পার। তারপরও গঙ্গার একাধিক ঘাটে কাঠামো ভেসে থাকা নিয়ে ব্যাপক ক্ষুব্ধ সমাজ সচেতন সাধারণ মানুষ।

    গঙ্গা দূষণ নিয়ন্ত্রণে কড়া অবস্থান রয়েছে পরিবেশ আদালতের। তাই প্রতিমা নিরঞ্জনের পর দিনের পর দিন কাঠামো ফেলে রাখা কেবল অসচেতনতাই নয়, এক প্রকার ‘অপরাধ’ বলেই গণ্য হয়। কমবেশি গঙ্গার সংলগ্ন বঙ্গের সব শহরেই নিরঞ্জনের পর প্রতিমার কাঠামো সব তোলা হয় না। দিনের পর দিন সেগুলি গঙ্গার জলে মিশে বাড়ায় দূষণের মাত্রা। শান্তিপুর সেই তালিকায় ব্যতিক্রম তো নয়ই, বরং গঙ্গা দূষণ নিয়ে অসচেতনতার তালিকায় শীর্ষস্থানীয়। বুধবার শহরের বিভিন্ন গঙ্গার ঘাট পর্যবেক্ষণ করে তার হাতে গরম প্রমাণ মিলেছে। কী পরিস্থিতি শান্তিপুরের গঙ্গার ঘাটগুলির? ভাগীরথীর পূর্বপাড়ে অবস্থিত এই জনপদের মোটামুটি তিন-চারটি ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জন হয়। তার মধ্যেই উল্লেখযোগ্য মতিগঞ্জ ঘাট, বড়বাজার ঘাট এবং কৃষ্ণ কালিতলা ঘাট। বুধবার দেখা গেল, তিনটি ঘাটেই বহু প্রতিমার কাঠামো এখনও পড়ে রয়েছে সেই দশমীর দিন থেকে। ঘাট সংলগ্ন জলে ভাসছে সেগুলি। এর মধ্যে সবচেয়ে করুণ পরিস্থিতি মতিগঞ্জ ঘাটে। একাধিক প্রতিমার কাঠামোর পাশাপাশি ফুল বেলপাতার মতো পচনশীল বস্তুগুলিও জলে পড়ে পড়ে দূষণ ছড়াচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, এমন ছবি নতুন নয়। যেকোনও বছর প্রতিমা নিরঞ্জনের পর শান্তিপুরে এলেই এই ছবি দেখা যায়। নিরঞ্জনের পরও জলে পড়ে থাকে কাঠামো। পুরসভা বিষয়টি নিয়ে সক্রিয় হলে এমন হতো না। যেদিন ভাসান হয় সেদিন কিছু তোলা হয়। বাকি তুলতে মাস কাবার হয়ে যায়। 

    যদিও এই অভিযোগ মানতে চাইছে না পুরসভা। তাদের দাবি, যথেষ্ট সক্রিয়তার সঙ্গে প্রতিমা নিরঞ্জনের পর গঙ্গা থেকে কাঠামো তুলে ফেলা হয়। নির্দিষ্ট সময়ের পরে যারা ভাসান দেন সেইরকম হাতেগোনা কয়েকটি কাঠামো পড়ে থাকে। বিষয়টি নিয়ে শান্তিপুর পুরসভার চেয়ারম্যান সুব্রত ঘোষ বলেন, দিনের পর দিন জলে কাঠামো পড়ে থাকে এই অভিযোগ ঠিক নয়। এই বছর ১২ তারিখে দশমী পড়েছিল। অনেকে ১৩ তারিখ দশমী হিসাবে প্রতিমা নিরঞ্জন করেছেন। দুদিনেই আমাদের তরফে জেসিবি এবং পুরসভার কর্মী রাখা ছিল। তারা প্রচুর কাঠামো জল থেকে তুলেছেন। এর পরবর্তীতে বেশ কয়েকটি প্রতিমা নিরঞ্জন হয়েছে। সম্ভবত সে রকম কয়েকটি কাঠামোই পড়ে রয়েছে ঘাটগুলিতে। তবে দিনের পর দিন সেগুলি মোটেও পড়ে থাকবে না। আমি নির্দেশ দিয়েছি দ্রুত গঙ্গার জল থেকে সমস্ত কাঠামো তুলে ফেলতে হবে। আশা করছি আগামী দু দিনের মধ্যে সমস্ত ঘাট পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে। - নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)