এক বৃহস্পতিবার পার করে প্রতিমার বিসর্জন হয় কীর্ণাহারে ব্যবসায়ী সমিতির লক্ষ্মীপুজোয়
বর্তমান | ১৭ অক্টোবর ২০২৪
সংবাদদাতা, শান্তিনিকেতন: দুর্গাপুজোর রেশ কাটতে না কাটতেই আপামর বাঙালি লক্ষ্মীপুজোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। নানুর ব্লকের কীর্ণাহারেও স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে লক্ষ্মীপুজো নিয়ে উন্মাদনা শুরু হয়েছে। এই বছর কীর্ণাহার ব্যবসায়ী সমিতির লক্ষ্মীপুজো ৪৪ বছরে পা দিল। লক্ষ্মী পূর্ণিমার তিথিতে পুজো শুরু হওয়ার পর এক বৃহস্পতিবার পার করে পরবর্তী বুধবার বিসর্জন হয়। ততদিন অবধি প্রতিমা থাকেন ও পূজিত হন লক্ষীতলায়।
এখানকার লক্ষ্মীপুজোও দুর্গোৎসবের মতোই সমান জনপ্রিয়। জনশ্রুতি অনুযায়ী প্রায় ১৫০ বছরের বেশি আগে স্থানীয় নাকদিহি পাড়ার বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের হাত ধরে লক্ষ্মীপুজোর প্রচলন হয় কীর্ণাহারে। ১৯৮০ সাল থেকে সেই পুজোর সমস্ত দায়ভার কাঁধে নেয় কীর্ণাহার ব্যবসায়ী সমিতি। তারপর থেকেই এই পুজোর জাঁকজমক বেড়েছে। এখানকার লক্ষীপুজোর বৈশিষ্ট্য হল, পূর্ণিমা তিথিতে পুজো হওয়ার পরবর্তী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতিমা মণ্ডপে থাকে। তারপরের সপ্তাহের বুধবারে বিসর্জন হয়। উদ্যোক্তাদের থেকে জানা গিয়েছে, অতীতের অত্যন্ত প্রসিদ্ধ এখানকার লক্ষ্মীপূজার প্রতিমা থেকে যেত নবান্ন উৎসব অবধি। জনশ্রুতি ছিল, মা লক্ষ্মী অগ্রহায়ণের প্রথম অন্ন গ্রহণ করে তারপরই রওনা দিতেন। কীর্ণাহার মার্কেট কমপ্লেক্সের লক্ষ্মীতলায় পুজোর দিনগুলিতে কীর্তন, যাত্রাপালা, গীতাপাঠ, নামগান, বিচিত্রানুষ্ঠান সহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। কীর্ণাহারের বিখ্যাত লক্ষ্মীপুজোকে কেন্দ্র করে শুধু স্থানীয় নয়, আশেপাশের এলাকার মানুষরাও আনন্দে মেতে ওঠেন।
কীর্ণাহার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক তপন দে ও সভাপতি উৎপলকান্তি পাল বলেন, দুর্গাপুজোয় আমরা যেভাবে আনন্দ উপভোগ করি, একইভাবে লক্ষ্মীপুজোতেও সকলে উৎসবে মেতে উঠি। আমরা চাই সকলেই সুস্থভাবে এই উৎসব উপভোগ করুক।
অন্যদিকে লাভপুরের তরুলিয়াহাটে লক্ষ্মীপুজোকে কেন্দ্র করে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেন স্থানীয় মানুষ। দুর্গোৎসবের পর পূর্ণিমা তিথিতে মা লক্ষ্মীর আরাধনা হয়ে থাকে। সনাতন ধর্মের প্রত্যেকের বাড়িতেই এদিন মা লক্ষ্মীর পুজো হয়ে থাকে। একইভাবে লাভপুর ব্লকের তরুলিয়া হাট ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকেও দীর্ঘদিন ধরে মহা ধুমধাম করে লক্ষ্মীপূজার আয়োজন করা হচ্ছে। দুর্গোৎসবের মতো লক্ষ্মীপুজোতেও থিমের মধ্য দিয়ে তাদের মণ্ডপ সাজিয়ে তোলা হয়। এই বছর তাদের থিম উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথ মন্দিরের বন্যা কবলিত সময়ের ছবি। লক্ষ্মীপুজোকে কেন্দ্র করে মেলা বসে এলাকায়। বুধবার লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ পুজো এবং মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এদিনের অনুষ্ঠানে তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন লাভপুর ব্লকের অন্যান্য তৃণমূল নেতৃত্ব ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। বিধায়ক বলেন, পুজো ও তাকে কেন্দ্র করে বসা মেলার উপর বহু মানুষের জীবিকা নির্ভর করে। পাশাপাশি অর্থনীতির বাড়বাড়ন্ত হয়। আগামী বছর এই মেলা আরও বড় করে করা হবে। -নিজস্ব চিত্র