• ১০ লক্ষ টাকা লোনের মর্টগেজ মাত্র ৩৯৮ টাকার চেক!, ম্যাজিক পেনের কারিকুরিতে প্রতারণা শিকার ধরতে এজেন্ট নিয়োগ
    বর্তমান | ১৭ অক্টোবর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: ১০ লক্ষ টাকা লোন পাওয়া যাবে। তার জন্য মর্টগেজ মাত্র ৩৯৮ টাকার চেক! এত সহজে বিপুল অঙ্কের লোনের টোপ দিয়েই প্রতারণার ফাঁদ পাতছে সাইবার প্রতারকরা। আর এই ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। অনলাইনে প্রতারণার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ এখন অনেকটাই সতর্ক। তাই বিশ্বাস অর্জনের জন্য বাড়িতে তারা এজেন্ট পাঠাচ্ছে। সেই এজেন্টই ওই সামান্য অঙ্কের টাকার দু’টি বাতিল চেক নিয়ে আসছে। তাতে সই করে দিলেই বিপুল অঙ্কের টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাবে বলে জানানো হচ্ছে। সামান্য টাকা লোকসানের ভয় থাকায় অনেকেই সেই চেকে সই করে দিচ্ছেন। ব্যাস, সই হয়ে গেলেই সাইবার প্রাতারকদের পোয়া বারো। ম্যাজিক পেনে লেখা সামান্য অঙ্কের টাকা মুছে মোটা অঙ্কের টাকার পরিমাণ বসিয়ে তা অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নিচ্ছে সাইবার প্রতারকরা। বাঁকুড়া জেলায় এনিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, জয়পুর ও সারেঙ্গা থানায় লোন দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লক্ষাধিক টাকার প্রতারণার অভিযোগ হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। 

    পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছুদিন আগে সারেঙ্গার গড়গড়িয়া এলাকার এক ব্যবসায়ীর কাছে একটি ফিনান্স কোম্পানির নাম করে মনোজকুমার গুপ্তা নামে এক ব্যক্তি ফোন করে। বিনা মর্টগেজে ১০ লক্ষ টাকা লোন দেওয়ার কথা জানায়। লোনের টাকা যাতে মার না যায় এবং পরবর্তীকালে যাতে আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে সেজন্য দু’টি ক্যানসেল চেক এবং দু’টি ১৯৯টাকার চেক দিতে হবে বলে জানায়। ব্যবসায়ী তাতে রাজি হয়ে যান। এরপরেই এক ব্যক্তি গড়গড়িয়ায় ব্যবসায়ীর বাড়িতে আসে। সে চারটি চেকে ব্যবসায়ীর সই করিয়ে নিয়ে চলে যায়। ওইদিনই তাঁর একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে ১লক্ষ ৮৬হাজার ৫০০টাকা তুলে নেওয়া হয়। সন্দেহ হওয়ায় ব্যবসায়ী তৎক্ষণাৎ অন্য একটি ব্যাঙ্কে গিয়ে অ্যাকাউন্ট ব্লক করেন। ব্যবসায়ী বলেন, এর আগেও আমি অন্যান্য ফিনান্স কোম্পানি থেকে লোন নিয়েছি। সেখানেও ক্যানসেল চেক দিতে হয়েছে। তাই এক্ষেত্রেও কোনও সন্দেহ হয়নি। তাছাড়া লোন না হলেও ১৯৯টাকার করে দু’টি চেকে মোট ৩৯৮টাকা চলে গেলেও গায়ে লাগবে না। তাই চেকে সই করি। পরে ওই চেক ভাঙিয়ে আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ১ লক্ষ ৮৬ হাজার ৫০০টাকা তুলে নেওয়া হয়। অন্য একটি ব্যাঙ্কের চেক থেকেও টাকা তোলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু, আমি তা বুঝতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট ব্লক করি। তাই তারা টাকা তুলতে পারেনি। গোটা বিষয়টি পুলিসকে জানিয়ে অভিযোগ করেছি।

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, একইভাবে জয়পুরেও কিছুদিন আগে এক ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে সমপরিমাণ টাকা তুলে নেওয়া হয়। পুলিস দু’টি অভিযোগেরই তদন্ত শুরু করেছে।
  • Link to this news (বর্তমান)