• মুখ্যমন্ত্রীর দূত হয়ে সেবাশ্রমে উদয়ন, অনন্তের হাতে ‘নিগৃহীত’ সন্ন্যাসীকে ফোন মমতার
    বর্তমান | ১৭ অক্টোবর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, দিনহাটা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূত হয়ে বুধবার সিতাইয়ের রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ সেবাশ্রমে আসেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। তিনি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আশ্রমের প্রবীণ সন্ন্যাসীর কথা বলিয়ে দেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। আমার খুব খারাপ লেগেছে। উদয়ন গুহকে বলেছি আপনার সঙ্গে দেখা করার জন্য। আপনার জন্য কিছু প্রণামী পাঠিয়েছি। কোচবিহারে কখনও গেলে দেখা করব। আপনার কোনও সমস্যা হলে মন্ত্রী উদয়ন গুহ কিংবা সিতাইতে আমাদের সাংসদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। 

    উল্লেখ্য, দশমীর রাতে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ নগেন রায় ওরফে অনন্ত মহারাজের হাতে চূড়ান্ত হেনস্তা হয়েছিলেন সিতাই রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ সেবাশ্রমের স্বামী বিজ্ঞানন্দ মহারাজ। ঘটনার প্রতিবাদে ওই রাতেই সিতাই-মাথাভাঙা রাস্তা অবরোধ করা হয়েছিল। পরের দিন উদয়ন গুহ আশ্রমে এসেছিলেন। আর এবার এলেন মুখ্যমন্ত্রীর দূত হয়ে। আশ্রমের কোনও সমস্যা হলে অবশ্যই পাশে থাকবেন বলে সরাসরি আশ্বাস দিয়েছেন মমতা। সেইসঙ্গে প্রণামীও পাঠিয়েছেন মন্ত্রীর হাত দিয়ে। জবাবে মমতাকে ‘জয় মা জয় মা’ বলে সম্মান জানিয়েছেন প্রবীণ সন্ন্যাসী। আশ্রমবাসী সহ স্থানীয় বাসিন্দাদের মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো অন্ন রান্না করে খাওয়াবেন বলেও কথা দিয়েছেন। উদয়ন গুহর সঙ্গে এদিন আশ্রমে এসেছিলেন সিতাই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঙ্গীত বসুনিয়াও। 

    স্বামী বিজ্ঞানন্দ মহারাজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মোবাইলে ‘জয় মা জয় মা’ বলে সম্বোধন করে বলেন, আপনার পাঠানো প্রণামী সাদরে গ্রহণ করেছি। উদয়ন গুহ বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই আশ্রমে এসেছি। যে কোনও প্রয়োজনে আপনার পাশেই সর্বদা থাকব। প্রায় ১০ বছর আগে পরিব্রাজক সন্ন্যাসী স্বামী বিজ্ঞানন্দ মহারাজ সিতাইতে আসেন। সিতাইয়ের শালটিয়াবাড়িতে আশ্রম করেন। গ্রামের মানুষের মধ্যে শিক্ষার বিস্তার করছেন তিনি। সিতাইয়ের বিধায়ক থাকাকালীন জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া এমএলএ তহবিলের টাকায় আশ্রমের চারিদিক ঘিরেও দিয়েছেন। 

    জানা গিয়েছে, গত দশমীর দিন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ অনন্ত মহারাজ আশ্রমে এসেছিলেন। সন্ন্যাসীর সঙ্গে কথাবার্তা বলার সময় আচমকাই মেজাজ হারান তিনি। সন্ন্যাসীকে নিগ্রহ সহ অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজের অভিযোগ ওঠে সাংসদের বিরুদ্ধে। সিতাই থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও রুজু করে আশ্রম কর্তৃপক্ষ। পাল্টা অনন্ত মহারাজের যুক্তি ছিল, স্থানীয় মানুষকে অপমান করছেন ওই সন্ন্যাসী। এই খবর পেয়েই আশ্রমে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তাঁকে পাল্টা অপমান করা হয়েছে। ওই ঘটনার পরদিনই আশ্রমে হাজির হয়েছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর দূত হয়ে আবার তিনি আশ্রমে আসেন। চাল, ডাল সহ মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো ভোগের সামগ্রী উপহার হিসেবে তুলে দেন সন্ন্যাসীর হাতে।

    (রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমে আক্রান্ত সন্ন্যাসীর সঙ্গে উদয়ন গুহ। - নিজস্ব চিত্র। )
  • Link to this news (বর্তমান)