• জলপাইগুড়ি শহরে ৭৩ বছরের মন্দিরে লক্ষ্মীপুজোর অন্যতম আকর্ষণ অন্নভোগ
    বর্তমান | ১৭ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: খিচুড়ির সঙ্গে হরেক সব্জি দিয়ে লাবড়া। সঙ্গে পনিরের তরকারি। পাঁচরকম ভাজা, চাটনি, পাঁপড়, পায়েস, দই-মিষ্টি। প্রতিবারের মতো এবারও এই মেনুতেই ভোগ দেওয়া হচ্ছে জলপাইগুড়ি শহরের টেম্পল স্ট্রিটের লক্ষ্মী-নারায়ণ মন্দিরের মা লক্ষ্মীকে। ৭৩ বছরের প্রাচীন এই পুজোর মূল আকর্ষণই হল অন্নভোগ। বুধবার রাতে পুজো হয়েছে। তবে আজ, বৃহস্পতিবার সকালে মাকে নিবেদন করা হবে অন্নভোগ। পুজো শেষে তা বিলি করা হবে উপস্থিত ভক্ত-দর্শনার্থীদের মধ্যে। ভোগ পেতে ভিড় জমাবেন বহু মানুষ।

    ১৯৫১ সাল থেকে এখানে লক্ষ্মীপুজো হচ্ছে। জনৈক ডাঃ তারকনাথ কর্মকার পাথরের লক্ষ্মী মূর্তিতে পুজোর পত্তন করেন। তাঁর হাতেই প্রতিষ্ঠা হয় মন্দির। পরে মন্দির সংস্কার হলেও বদলায়নি আদল। বর্তমানে মন্দিরটি পরিচালনা করে ট্রাস্টি। ট্রাস্টির সম্পাদক উৎপল মহন্ত বলেন, ৭৩ বছর ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে মন্দিরে লক্ষ্মীপুজো হয়ে আসছে। সারা বছর এখানে ভগবান বিষ্ণুর সঙ্গে সম্পর্কিত একাধিক পুজো, অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। তবে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর দিন আমাদের মন্দিরের মা লক্ষ্মীর বাৎসরিক পুজো। নারকেল নাড়ু, মুড়কি, মোয়া এসব তো আছেই, তবে সবচেয়ে যেটা আকর্ষণীয় তা আমাদের মায়ের সামনে নিবেদন করা অন্নভোগ। বাড়িতে কোনও অতিথি এলে আমরা যেভাবে তাঁকে নানা পদে সাজিয়ে খেতে দিই, ঠিক সেভাবেই মা লক্ষ্মীর সামনে ভোগ নিবেদন করা হয়। পুজো শেষে সেই ভোগ বিলি করা হয় ভক্ত-দর্শনার্থীদের মধ্যে। এবার বৃহস্পতিবার সকালে ভোগ দেওয়া হবে।

    এদিকে, দেশভাগের পর এপারে চলে এলেও লক্ষ্মীপুজো বন্ধ হয়নি জলপাইগুড়ি শহরের পান্ডাপাড়া ঘোষবাড়ির। একসময় ঘোষবাড়ির লক্ষ্মীপুজোয় পাত পেড়ে খাওয়াদাওয়া হতো। এখন সেই জৌলুস না থাকলেও বেশ ধুমধাম করেই পুজো হয়। পরিবারের সদস্য পিঙ্কি ঘোষ বলেন, জলপাইগুড়িতেই আমাদের বাড়ির পুজো প্রায় ৮০ বছর ধরে হচ্ছে। শ্বশুরমশাই ঢাকার ভিটে থেকে মাটি নিয়ে এসেছিলেন। সেই মাটিতে ঘট স্থাপন করে পুজো শুরু হয় পান্ডাপাড়ার বাড়িতে। সময় বদলেছে। কিন্তু নিয়মনিষ্ঠা মেনে আজও অটুট কোজাগরীর আরাধনা। তাঁর কথায়, আমাদের মা লক্ষ্মীকে মিষ্টান্ন ভোগ দেওয়া হয়। পুজো উপলক্ষ্যে বাড়িজুড়ে দেওয়া হয় আলপনা। নাড়ু, মুড়কি আজও সবই হাতেই বানানো হয়। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)