• দুর্গোত্সবকেও ছাপিয়ে যায় টেনহরি গ্রামের লক্ষ্মীপুজো
    বর্তমান | ১৭ অক্টোবর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, রায়গঞ্জ: রায়গঞ্জের মাড়াইকুড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের টেনহরি গ্রামের লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন ছাপিয়ে যায় দুর্গাপুজোকেও। পূর্ণিমার চাঁদের আলোয় এই গ্রামে জাঁকজমকভাবে আরাধনা হয় কোজাগরী লক্ষ্মীর। প্রত্যেক বাড়িতে ছোট করে পুজো হলেও গ্রামের ৬০টি বাড়িতে রীতিমতো বড় করে লক্ষ্মীপুজো হয়। ঝাঁ চকচকে লাইটিং এবং প্যান্ডেল থাকে সেখানে। এইবছর বুধবার এবং বৃহস্পতিবার, দু’দিন ধরে পুজো হবে দেবীর। সেই পুজোকে কেন্দ্র করেই ঘরে ঘরে আয়োজন। বাড়ির মহিলারা বিভিন্ন নকশার আলপনার দেওয়ার পাশাপাশি ফুটিয়ে তুলছেন দেবী লক্ষ্মীর পায়ের ছাপ। আবার কেউ বানাচ্ছেন বিভিন্ন রকমের নাড়ু, মুড়কি, মোয়া। বাড়ির ছেলেরাও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাতে।

    দুর্গাপুজোর রেশ কাটতে না কাটতেই টেনহরি গ্রামে লক্ষ্মীপুজোকে কেন্দ্র করে এত বড় আয়োজন কী কারণে? গ্রামবাসীদের দাবি, এই গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ শস্য ফলিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাই ধন-সম্পদ যাতে সুরক্ষিত থাকে, সেই বিশ্বাস থেকেই লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়।

    গ্রামের বাসিন্দা শঙ্করচন্দ্র দাস বলেন, আমাদের বাড়িতে একশো বছর ধরে পুজো হয়ে আসছে। এটি আমাদের বাৎসরিক পুজো। তাই দুর্গাপুজোয় তেমন আনন্দ আমরা না করলেও এই পুজোয় আমাদের সবচেয়ে বেশি আনন্দ হয়।

    টেনহরি গ্রামের এই লক্ষ্মীপুজোকে কেন্দ্র করে টেনোহরি জুনিয়র হাইস্কুল মাঠে বসে বিশাল মেলা। সেখানেও একটি বারোয়ারী লক্ষ্মী মন্দির রয়েছে। সেই মেলায় শুধু এই গ্রামের লোক নয়, দূরদূরান্ত থেকে আসেন বহু মানুষ। এই গ্রাম ঘুরলে দেখা যাবে, বেশিরভাগ লক্ষ্মীর মন্দির দো-চালা ঘরের। আর মন্দিরের সামনে আঁকা রয়েছে সুদর্শন আলপনা। 

    টুম্পা দাস বলেন, আমাদের গ্রাম কৃষিনির্ভর। মাঠঘাট ভরে ওঠে ফসলে। তা  বিক্রি করেই আমরা এই পুজোর জন্য অর্থগুছিয়ে রাখি। পুজোর দুদিন পর  মেলা বসে। এবছরও মেলা হবে শুক্রবার। সেখানে বড়বড় প্রতিমাও নিয়ে যাওয়া হয়। কেউ নিরঞ্জন দিয়ে দেন। লক্ষ্মীপুজো আমাদের গ্রামের প্রধান উৎসব তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

    তবে প্রতিবছর লক্ষ্মী প্রতিমার কার্নিভাল হলেও এবছর থেকে সেই কার্নিভাল হচ্ছে না বলে জানান গ্রামবাসী। প্রত্যেকের বাড়িতে মন্দির থাকায় এখন আর সেভাবে প্রতিমা বাইরে নিয়ে যেতে চান না তাঁরা। সে কারণেই লক্ষ্মী প্রতিমা কার্নিভাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এবছর সময়মত বৃষ্টি না হওয়ায় এবং অসময়ে বৃষ্টির জেরে ফসলের অনেক ক্ষতি হয়েছে। সামনেই শীতের মরশুম। ফসল যাতে ভালো হয়, সেই কামনা দেবী লক্ষ্মীর কাছে করবেন বলে জানান গ্রামের বাসিন্দা স্বপনচন্দ্র দাস। - নিজস্ব চিত্র। 
  • Link to this news (বর্তমান)