• গোড়াহারে শতাব্দী প্রাচীন লক্ষ্মীপুজোয় সম্প্রীতির নজির
    বর্তমান | ১৭ অক্টোবর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, ইটাহার: তিনটি নদীর মিলনস্থল গোড়াহার গ্রামের লক্ষ্মীপুজো যেন সম্প্রীতির নজির। এই পুজো ১০০ বছরের পুরনো। সেখানে কোজাগরীর আরাধনায় সহযোগিতা করেন মুসলিমরাও। বুধবার সন্ধ্যায় নদীপারের মন্দিরে লক্ষ্মীপুজো হয়েছে। আয়োজন করা হয়েছে দু’দিনের মেলা।

    মহানন্দা নদী পার হয়ে মেলায় যোগ দিয়েছেন বিহারের বাসিন্দারাও। ইটাহারের গোড়াহার গ্রামটি মহানন্দা, নাগর ও কুলিক নদীর মিলনস্থলে অবস্থিত। মহানন্দার ওপারে রয়েছে বিহারের কাটিহার জেলার তারাপুর, মথুরাপুর, আবাদপুর সহ একাধিক গ্রাম। সেই গ্রামের বাসিন্দারাও পুজোয় শামিল হন। শতাব্দী প্রাচীন এই লক্ষ্মীপুজো আয়োজনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন গ্রামের মুসলিম সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা। 

    এভাবেই প্রায় তিন পুরুষ ধরে চলে আসছে পুজো। প্রথমে লক্ষ্মীপুজোর দিনে মহানন্দায় হত নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা ও নদীর পারে মেলা বসত। পাশাপাশি গ্রামে বাড়ি বাড়ি কোজাগরীর আরাধনা হত।

    পরবর্তীতে ইটাহার থানার তৎকালীন বড়বাবু নদীর পারে মূর্তি বসিয়ে লক্ষ্মীপুজো করার পরামর্শ দেন। সেই মত ৬০ পয়সা দিয়ে প্রতিমা কিনে পুজো শুরু করেন বাসিন্দারা। তবে যাঁরা এই পুজো শুরু করেন, তাদের কেউ এখন আর বেঁচে নেই। এখন পুজোর মূল উদ্যোক্তাদের বংশধর তথা পুজো কমিটির সম্পাদক নকুল দাস, সম্পাদক সাধু সিং, কোষাধ্যক্ষ জিতেন সাহা সহ অন্যরা পুজো করছেন। এই বিষয়ে গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা ধীরেন ঘোষ বলেন, বাপ ঠাকুরদারা নদীর পারে লক্ষ্মীপুজো শুরু করেন। আমাদের এই পুজো এখনও সম্প্রীতির বার্তা বহন করে।

    আগে সাদামাটা হলেও এবছর গোড়াহার গ্রামে লক্ষ্মীপুজো কমিটি নিজেদের জায়গায় নবনির্মিত মন্দিরে সাড়ম্বরে পুজোর আয়োজন করেছেন। নৌকাবাইচ না হলেও বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বিরাট মেলা বসবে মন্দির প্রাঙ্গণে। থাকবে আলোকসজ্জা। ইটাহার, রায়গঞ্জ সহ পার্শ্ববর্তী বিহারের হাজার হাজার মানুষ মহানন্দা পেরিয়ে এই মেলায় হাজির হন। 

    কোষাধ্যক্ষ বলেন, হিন্দু-মুসলিম কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পুজো ও মেলার আয়োজন করি। গ্রামের এক বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম জানান, গ্রামের একটি ঐতিহ্যবাহী পুরানো পুজো যাতে বন্ধ না হয় তাই আমরা পুজো কমিটিকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করি। আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে পুলিস প্রশাসনও সহযোগিতা করে।
  • Link to this news (বর্তমান)