নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: আরও বেলাগাম দিলীপ বর্মন! পুলিস ও প্রশাসনের পর এবার পুরসভার বিরুদ্ধেই সরব। তিনি শিলিগুড়ি পুরসভার বিতর্কিত মেয়র পরিষদ সদস্য (এমআইসি)। বুধবার তিনি বলেন, নিজের গাঁটের কড়ি খরচ করে উন্নয়নমূলক কাজ করলেও আমাকেই কোণঠাসা করছেন পুরসভার কয়েকজন কর্তা। তাই এমআইসি পদ গেলেও কিছু যায় আসে না। বিদ্রোহী এই এমআইসির একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য ঘিরে চরম অস্বস্তিতে তৃণমূল কংগ্রেস শাসিত পুরবোর্ড। তৃণমূলের আগামী পরিষদীয় কমিটির বৈঠকে এব্যাপারে দিলীপের কাছে কৈফিয়ৎ তলব করা হতে পারে বলে খবর। শিলিগুড়ি শহরের ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার দিলীপ বর্মন। তিনি পুরসভার ট্রেড লাইসেন্স, ক্রীড়া ও আবাসন বিভাগের এমআইসি। এবার তিনি পুরসভার বিরুদ্ধেই মুখ খুলেছেন। দিলীপ বর্মন বলেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে উজানু মৌজায় খাস জমি দখলের হাত থেকে রক্ষা করেছি। সেখানে কাদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে তা পুরসভার কর্তারা জানাচ্ছেন না। তাঁরা নিজেদের মতো করে সবটা ভাবছেন। আমাকে না জানিয়েই চম্পাসারি এলাকায় জবরদখল উচ্ছেদ করা হয়েছে। তাছাড়া, পুজোর মুখে নিজের পকেটের টাকা খরচ করে রাস্তায় পথবাতি লাগিয়েছি। রাস্তা ঠিক করেছি। কিন্তু, আমাকেই গ্যারেজ করা হচ্ছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে মানুষের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব। পুজো কার্নিভাল ও নিজের ক্লাবের প্রতিমা বিসর্জন নিয়ে মঙ্গলবার পুলিস ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরব হন দিলীপ। এর আগে দৈনিক নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতিতে কর্তৃত্ব ফলানো নিয়ে তাঁর সঙ্গে ঝামেলা হয় দলীয় শ্রমিক সংগঠনের। এমনকী, দলের দার্জিলিং জেলা সভানেত্রী (সমতল) পাপিয়া ঘোষের সঙ্গেও তাঁর সংঘাত বাধে। ধারাবাহিকভাবে দল, পুলিস, প্রশাসন ও পুরসভার বিরুদ্ধে দিলীপ গলা ফাটালেও তাঁকে লাগাম পরাতে পারেনি তৃণমূল। এবার গোটা পরিস্থিতি নিয়ে পুরসভা ও দলের অন্দরে ব্যাপক চর্চা শুরু হয়েছে। এমনকী, দলের একাংশ বেপরোয়া এই এমআইসির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তুলছেন। পুরসভা সূত্রের খবর, পুরসভায় তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা ৩৭। তাঁদের নিয়ে পরিষদীয় কমিটি রয়েছে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে সংশ্লিষ্ট কমিটির বৈঠক হতে পারে। একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করার জন্য সেখানেই দিলীপের কাছে কৈফিয়ৎ তলব করা হতে পারে বলে খবর। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় দিলীপ বলেন, কাউকে ভয় পাই না। যখন আমার কাছে পরিষদীয় কমিটি জানতে চাইবে, তখন জবাব দেব। ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার বলেন, আমাদের দলে কিছু নিয়ম ও রীতি রয়েছে। তাই সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখখোলা ওনার উচিত হয়নি। দলীয় স্তরে, পরিষদীয় কমিটিতে নিজের বক্তব্য জানাতে পারতেন। এদিকে, দলের দার্জিলিং জেলা সভানেত্রী (সমতল) অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।