নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসে অ্যাকাউন্ট খোলা থেকে শুরু করে যেকোনও সরকারি আর্থিক সুবিধা পেতে আধার যাচাইকরণ বাধ্যতামূলক। সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা সেরকমই। স্কুলে ভর্তি থেকে শুরু করে যেকোনও সামাজিক ক্ষেত্রে ‘নির্বিকল্প’ হয়ে উঠেছে আধার। ১৫ বছর আগে আধার ব্যবস্থা চালু হয়েছে দেশে। অথচ তার যাচাইকরণ ১০০ শতাংশ সাফল্য থেকে এখনও বহু দূরে। এই দাবি খোদ আধার কর্তৃপক্ষের। বর্তমানে আধার যাচাই করা যায় তিনটি উপায়ে। আঙুলের ছাপ, চোখের মণির ছবি এবং মুখের ছবি। সম্প্রতি আধার কর্তৃপক্ষ তাদের অন্তর্বর্তী রিপোর্টে দাবি করেছে, এই তিন ক্ষেত্রেই কোথাও ১০০ শতাংশ সাফল্য মিলছে না। সাফল্যের হার থমকে রয়েছে ৮১ থেকে ৮৪ শতাংশের মধ্যে। মোট কথা, আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত প্রতারণা হোক বা সামাজিক প্রকল্পের সুবিধা—সম্পূর্ণ সুরক্ষায় আধারকে কাজে লাগাতে এখনও অপারগ কেন্দ্র।
ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অব ইন্ডিয়া (আধার) কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আঙুলের ছাপ নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের সাফল্যের হার ৮১ শতাংশ। একই হার প্রযোজ্য চোখের মণির ছবির ক্ষেত্রেও। মুখমণ্ডলের ছবির ক্ষেত্রে সাফল্যের হার একটু বেশি, ৮৪ শতাংশ। যেহেতু ফেস অথেন্টিকেশন বা মুখমণ্ডলের ছবিতে সাফল্য বেশি, তাই আধার যাচাইকরণে এটাকেই বেশি গুরুত্ব দিতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু সেক্ষেত্রেও যে সার্বিক গ্রহণযোগ্যতায় ঘাটতি আছে, তা মানছে আধার কর্তৃপক্ষ।
কী সেই ঘাটতি? ইউআইডিএআইয়ের বক্তব্য, কম আলোর মতো প্রাকৃতিক সমস্যায় এই পদ্ধতি সবসময় ব্যবহার করা যায় না। কিছু স্মার্ট ফোনে এই সুবিধা পাওয়া যায় না। গুগল ও অন্যান্য অ্যাপ সিকিউরিটি সাপোর্ট করে না যে ডিভাইসগুলিতে, সেখানেও ফেস অথেন্টিকেশন ব্যবহার করা যায় না। কিন্তু এ তো গেল সীমাবদ্ধতার দিক। সুরক্ষার দিক থেকে কি সমস্ত ক্ষেত্রে নিরাপদ এই যাচাইকরণ পদ্ধতি? আধার কর্তৃপক্ষ বলছে, তা নয়।
ইউআইডিএআইয়ের বক্তব্য, প্রতারণার ঝুঁকি সবসময়ই থেকে যায়। সাইবার হানা বা ডিপফেক এক্ষেত্রে বড় ঝুঁকি বহন করে। কেন্দ্রীয় সংস্থাটির দাবি, এক্ষেত্রে মুখের অবয়বের অ্যানালিটিক্স ব্যবহার করে সমস্যা মোকাবিলার চেষ্টা করা হচ্ছে। আগামী দিনে নিত্যনতুন হানাদারির বিরুদ্ধে কীভাবে মোকাবিলা করা যেতে পারে, তার জন্য সর্বস্তরে পরামর্শ গ্রহণ চলবে, দাবি করেছে আধার কর্তৃপক্ষ।