• ‘আবার ৫০ শতাংশ দাম বাড়ল ওষুধের, জাস্টিস চাইবেন তো?’ আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের কাছে জানতে চান আম জনতা
    বর্তমান | ১৭ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: অভয়ার বিচারের দাবি, পাশাপাশি সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যপরিষেবা মসৃণ করতে লড়াই চালাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এমন অবস্থায় অত্যাবশকীয় বেশ কিছু ওষুধের দাম প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।  কর্মবিরতির জেরে জেরবার আম জনতার একাংশ বলছেন, এখন কেন প্রশ্ন তুলছেন না চিকিৎসকরা? কেন ওষুধের দাম বৃদ্ধির বিরোধিতা করছেন না। কেন জাস্টিস চাইছেন না? ওষুধের দামের সঙ্গে তো রোগীর চিকিৎসার সরসারি সম্পর্ক রয়েছে। তাহলে কেন নীরব চিকিৎসকরা?  

    বারাসত জেলা হাসপাতালে বুধবার ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন এক বৃদ্ধ। হাসপাতালে দাঁড়িয়েই বলছিলেন, আমি অ্যাজমার রোগী। ওষুধের যা দাম বাড়ছে তাতে মনে হয় আর কিনতে পারব না। আমরা মাঠে খেটে খাওয়া মানুষ। এর পরেই তাঁর প্রশ্ন, কই চিকিৎসকরা তো এই নিয়ে জাস্টিস চাই বলে গলা ফাটাচ্ছেন না? আসলে আমাদের কথা কেউ ভাবেন না। সুনীল নন্দী যখন ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন সেই সময় পাশ থেকে তাঁর সঙ্গেই গলা মেলালেন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত এক শিশুর মা। তাঁর সংযোজন, আর জি কর নিয়ে রাত দখল, দ্রোহের কার্নিভাল হচ্ছে। তবে, ওষুধ দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধে ওঁরা পথে নামলে ভালো লাগত।

    বারাসত জেলা হাসপাতাল মেডিক্যাল কলেজ হওয়ার পর অন্য জেলা থেকেও এখানকার ওপিডিতে ডাক্তার দেখাতে আসেন বহু মানুষ। এদিনও দেখা গেল হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসার করাতে আসার লম্বা লাইন। আর সেই লাইন দাঁড়িয়ে ছিলেন বারাসতের বোকুণ্ডার রিমা বসু। বলেন, ‘এই হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা সচল। কিন্তু, যেভাবে ওষুধের দাম বাড়ছে তা বলার নয়। এমনিতেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশছোঁয়া। তার উপর প্রয়োজনীয় ওষুধের দাম লাগামহীন হচ্ছে। ডাক্তারদের এনিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য নেই।’ স্বামীর শ্বাসকষ্টের সমস্যা। তার চিকিৎসা করাতে মাসে প্রায় সাতহাজার টাকার ওষুধ লাগে। তাঁর প্রশ্ন এবার কত লাগবে বলুন তো? অন্যদিকে, চোখের ছানি অপারেশন করাতে এসে ওষুধের দাম বৃদ্ধিতে মাথায় হাত রেবা মণ্ডলের। বললেন, ‘সত্যি আচ্ছে দিন ভালোই এসেছে। জীবনদান করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু জীবন বাঁচানোর রসদ ওষুধের যদি এরকম দাম বাড়ে তাহলে কি আর করা যাবে। মানুষ ওষুধ কিনতে না পেরে মরবে।’ শুধু তো আর ওষুধের দাম নয়, বেসরকারি হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে গেলে কার্যত সর্বস্ব খুইয়ে বসে থাকেন আম জনতা। সেরকমই হাওড়া থেকে এদিন এসএসকেএম হাসপাতালে মাকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন ছেলে সুবীর। বলছিলেন, ‘ওষুধের দাম তো খুবই বেড়েছে। তাই আমাদের ভরসা সরকারি হাসপাতাল। এখান থেকেই ওষুধ নিয়ে যাই। যদি কোনও ওষুধ না পাওয়া যায়, তবে বাইরে থেকে কিনতে হয়। তখনই তো সমস্যা হয়। এটা নিয়েও তো ডাক্তারবাবুরা সরব হতে পারেন। জাস্টিস চাইতে পারেন। মিছিল করতে পারেন। কেন করেন না জানি না।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)