• যুবকের মৃত্যু, গাফিলতির অভিযোগ ঘিরে বিক্ষোভ
    বর্তমান | ১৭ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: চিকিৎসকদের আন্দোলন পর্বের মাঝেই চিকিৎসা বিভ্রাটে এক যুবকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল। বুধবার চন্দননগর হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটেছে। এদিন তেলেনিপাড়ার বাসিন্দা বছর চল্লিশের দীপক চৌধুরীর মৃত্যু঩ হয় চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে। পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসকরা আন্দোলন নিয়ে ব্যস্ত। তাঁদের দায়সারা চিকিৎসার জন্যই দীপকের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাচক্রে ওই যুবকের দিদি চন্দননগর হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির অস্থায়ী কর্মী। দীপকবাবুর আত্মীয়দের তীব্র বিক্ষোভের জেরে হাসপাতালে ছুটে আসতে হয় পুলিস বাহিনীকে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অপ্রীতিকর কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবে ওই রোগীর পরিবার এদিন পুলিসের কাছে ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছে। চন্দননগর হাসপাতালের চিকিৎসকরা অবশ্য জানিয়েছেন, চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি হয়নি।

    ওই রোগীর দিদি তথা হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মী রীনা চৌধুরী বলেন, মঙ্গলবার ভাইকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে এসেছিলাম। তখন চিকিৎসকরা একটি ইঞ্জেকশন দিয়েই ছেড়ে দেন। এদিন ভাইয়ের শরীর আরও খারাপ হওয়ার ফের হাসপাতালে নিয়ে আসি। তখনও কয়েকটি ট্যাবলেট দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার আগেই ভাই ছটফট করতে শুরু করে। জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়ার আগেই মারা যায়। এই ঘটনাকে গাফিলতি ছাড়া আর কী বলা যায়? দু’দিনেও চিকিৎসকরা বুঝলেন না যে, ভাইকে হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন আছে? আসলে আন্দোলনের আবহে চিকিৎসকরা মত্ত হয়ে আছেন। দায়সারাভাবে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। সেকারণেই উৎসব মরশুমে, ভাইফোঁটার আগে ভাইকে হারাতে হল। এদিন কর্তব্যরত চিকিৎসক কুন্তল সাহা বলেন, ওই রোগীর যক্ষ্মা হয়েছিল। তা থেকেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা গিয়েছেন। রোগীকে যে অবস্থায় আনা হয়েছিল এবং যে সমস্যার কথা বলা হয়েছিল, সেই অনুসারে চিকিৎসা করা হয়েছে। কোথাও গাফিলতি হয়নি। চন্দননগর থানার পুলিস জানিয়েছে, ওই ঘটনায় হাসপাতাল বা রোগীর পরিবার কোনওপক্ষই অভিযোগ করেনি। হাসপাতালের পরিস্থিতিও দ্রুত স্বাভাবিক করা হয়েছে।

    মৃতের পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তেলেনিপাড়ার বাসিন্দা দীপক চৌধুরী বেশ কিছুদিন ধরেই যক্ষ্মায় ভুগছিলেন। কাঁচড়াপাড়ার এক চিকিৎসকের কাছে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। মঙ্গলবার তাঁর বুকে ব্যথা শুরু হয়। তখন তাঁকে চন্দননগর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, সেই সময় চিকিৎসকরা দীপকবাবুর সমস্যাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাননি। খুব চাপাচাপি করলে তাঁকে একটি ইঞ্জেকশন দিয়ে বুধবার বহির্বিভাগে আসতে বলা হয়। সেই মতো দীপকবাবুকে এদিন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ডাঃ কুন্তল সাহা তাঁকে দেখে কয়েকটি ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দেন। বহির্বিভাগ থেকে বের হতেই তাঁর বুকে ব্যথা শুরু হয়। দ্রুত তাঁকে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। কয়েক মিনিটের মধ্যে তিনি মারা যান। এরপরই রোগীর আত্মীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
  • Link to this news (বর্তমান)