• ডাব-কলাগাছের নৌকা ও ধানের শিস বিক্রি করতে ভবানীপুর আসেন কৃষকরা
    বর্তমান | ১৭ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আমতলা থেকে ফি বছর চারটি পুজোয় যদুবাবু বাজারে আসেন তাঁরা। সরস্বতী, বিশ্বকর্মা, কালী আর লক্ষ্মীপুজোয় আসেন তাঁরা। এঁদের কেউ ১০ হাজার, কেউ ১৩ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেছেন। কিনে এনেছেন পুজোর উপকরণ। এবার সেগুলি বিক্রি করার পালা। শিসওয়ালা ডাব, ধানের শিস, মাটি, কলা গাছ, কলা গাছের খোলের তৈরি নৌকা ইত্যাদি নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছেন বাজারে। এই দিনগুলি সাগর, স্বরূপরা আসেন। জিনিসপত্র বিক্রি করেন। তারপর দু’পয়সা লাভ করে বাড়ি ফেরেন মুখে হাসি নিয়ে।

    যদুবাবু বাজারের বড় রাস্তার ধারে ওঁরা বসেন। আমতলা থেকে এসেছেন সাগর নস্কর। বললেন, ‘হাজার দশেক টাকা দিয়ে মালপত্র কিনেছি। সব প্রায় বিক্রি হয়ে গিয়েছে। এ বছর ভালোই বিক্রি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালেও থাকব। লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছি।’ সাগর আঙুল তুলে দেখিয়ে বললেন, ‘ওই যে আর মাত্র দু’টো কলা গাছের খোল পড়ে রয়েছে।’ ওই দু’টো থেকে নৌকা তৈরি করছেন সাগর। সারা বছর তিনি কী করেন? সাগর মজা করে বললেন, ‘বাবা-মায়ের ঘা঩ড়ে চেপে বসে খাই। পুজোর দিনগুলি রোজগার করি। পরিবারে কিছু দিতে পারি।’ সাগরের পাশে বসে শেফালি পোদ্দার। উনি ভবানীপুরেই থাকেন। বললেন, ‘আমি তো ১৩ হাজার টাকা ব্যবসায় ঢেলেছি। মঙ্গলবার ভালোই বিক্রি হয়েছিল। বুধবার একটু কম হচ্ছে। দু’দিন লক্ষ্মীপুজোর তিথি বলে একটু সমস্যা হচ্ছে। তবে এ জিনিসপত্র পড়ে থাকে না। বিক্রি হয়ে যায়।’ অন্যদিকে বসার জন্য ভালো জায়গা পাননি বলে ব্যবসা কম হয়েছে বলে অভিযোগ আমতলার স্বরূপ সাঁপুইয়ের। তিনি বললেন, ‘মোড়ের মাথার দোকানগুলো থেকে বেশি লোক কিনছেন। আমাদের এখানে অনেকেই আসছেন না।’ সারা বছর চাষাবাদ করেন স্বরূপবাবু। বছরের এই চার পুজোর সময় যদুবাবু বাজারে এসে বসেন। উত্সব প্রতিবছর আসে। আর এই মানুষগুলোর মুখে হাসি ফোটে। শেফালিদেবী বলেন, ‘এখানে কালীপুজোর সময় খুব ভালো ব্যবসা হয়। আরও বেশি দোকান বসে। মানুষ আসে। এই উত্সব বাড়তি রোজগার দেয়। আমাদের মতো পরিবারের মুখে হাসি ফোটায়।’-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)