বাংলাদেশে ইলিশ ধরতে গিয়ে আটক ২ ট্রলার, বন্দি ৩১ ধীবর
এই সময় | ১৭ অক্টোবর ২০২৪
এই সময়, কাকদ্বীপ: বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে বাংলাদেশের নৌবাহিনীর হাতে আটক হলো কাকদ্বীপের দু’টি ট্রলার। এফবি বাসন্তী এবং এফবি জয় জগন্নাথ নামের ট্রলার দু’টিতে ৩১ জন মৎস্যজীবী রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁরা সকলেই কাকদ্বীপ এলাকার বাসিন্দা।এই সময় বাংলাদেশের জল সীমান্তে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার উপর সে দেশে সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু ট্রলার দু’টি ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর নজর এড়িয়ে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক জলসীমান্ত পার করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছিল বলে জানিয়েছেন কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী সংগঠনের কর্মকর্তারা। এর পর বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি জাহাজ গভীর সমুদ্রে ধাওয়া করে ভারতীয় ট্রলার দু’টিকে আটক করে বলে জানা গিয়েছে। আটক দু’টি ট্রলারের মৎস্যজীবীদের বাংলাদেশের পটুয়াখালি মৎস্য বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। কলাপাড়া থানার পুলিশের হাতে তাঁদের তুলে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার সন্ধে নাগাদ ঘটনার খবর পৌছানোর পর থেকে উদ্বিগ্ন মৎস্যজীবীদের পরিবারের লোকজনেরা। ইতিমধ্যেই মৎস্যজীবী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের মৎস্যজীবী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। কাকদ্বীপ ফিশারম্যান ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, ‘দ্রুত মৎস্যজীবীদের দেশে ফেরানোর আবেদন জানানো হয়েছে জেলা প্রশাসন ও রাজ্য সরকারের কাছে। আটক মৎস্যজীবীদের সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি মৎস্যজীবী সংগঠনের সঙ্গেও আমরা যোগাযোগ করছি। যেহেতু এই সময় বাংলাদেশে ব্যান পিরিয়ড চলছে। তার উপর বেশি ইলিশ পাওয়ার লোভে বেআইনি ভাবে জল সীমান্ত লঙ্ঘন করে আমাদের ট্রলার বাংলাদেশের সরকারি নিষেধাজ্ঞা ভেঙেছে। মৎস্যজীবীদেরকে বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে খবর পেয়েছি।’
মৎস্যজীবী সংগঠন সূত্রের খবর, গত ১১ তারিখ সকালে দু’টি ট্রলার নামখানা ঘাট থেকে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে রওনা দেয়। ১৪ তারিখ ইলিশ ধরতে ধরতে আচমকা গভীর সমুদ্রে ভারতীয় জলসীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ জল সীমান্তে পটুয়াখালির কুয়াকাটা সংলগ্ন গভীর সমুদ্রে ঢুকে পড়ে ট্রলার দু’টি।
কাকদ্বীপের বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা বলেন, ‘বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানতে পেরে আমাকে ফোন করেছিলেন। তিনি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছেন। পরিবারগুলোর উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। আইনি জটিলতা কাটিয়ে দ্রুত মৎস্যজীবীদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। মৎস্যজীবীদের পরিবারের পাশে রয়েছে রাজ্য সরকার।’
ধৃতদের কাছ থেকে ইলিশ-সহ প্রায় ৫০ মণ সামুদ্রিক মাছ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত সাগর ও নদীতে ২২ দিন মাছ ধরার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কম্যান্ডিং অফিসার মহম্মদ মসিউল ইসলাম বলেন, ‘ইলিশ বাঁচাতে ২২ দিন সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। গভীর সমুদ্রে নিয়মিত টহল চলছিল। এ সময় সমুদ্রে দুটো ট্রলার দেখতে পেয়ে বাহিনীর সদস্যরা ধাওয়া করে জাহাজ-সহ জেলেদের আটক করে। ভারতীয় পতাকাবাহী জাহাজ দু’টিতে ৩১ জন মৎস্যজীবী ছিলেন। রাতেই তাদের কলাপাড়া থানায় পাঠানো হয়েছে।’
কলাপাড়া থানার ওসি জুয়েল ইসলাম বলেন, ‘ধৃতদের পরিচয়, ঠিকানা এখনও জানা যায়নি। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর আদালতে পাঠানো হবে।’