জুনিয়র ডাক্তারদের আক্রমণ নয় নেট মাধ্যমে, বার্তা পদ্মে
এই সময় | ১৭ অক্টোবর ২০২৪
মণিপুস্পক সেনগুপ্ত
‘পাশে আছি’— এমন বার্তা কখনও ইঙ্গিতে, কখনও প্রকাশ্যে বঙ্গ-বিজেপি নেতৃত্বের তরফে দেওয়া হয়েছে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের। কিন্তু বিজেপি সূত্রের খবর, দলের নিচু তলার নেতা-কর্মীদের একাংশের তাতে কোনও হেলদোল নেই। তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বিঁধেই চলেছেন আন্দোলনকারীদের। তবে এ বার সামাজিক মাধ্যমে তাঁদের গতিবিধিতে লাগাম টানতে চাইছেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব।সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৪ অক্টোবর ঝটিতি সফরে কলকাতায় আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সূত্রের খবর, তিনি দক্ষিণ কলকাতার একটি প্রেক্ষাগৃহে বৈঠক করবেন বঙ্গ-বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে। সেখানে শাহ এ বিষয়ে কড়া বার্তা দেবেন বলে গেরুয়া শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে।
রাজ্য বিজেপির এক পদাধিকারীর কথায়, ‘আমরা তো পইপই করে কর্মীদের বলছি, জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনকে আক্রমণ না-করতে। তার পরেও দলের কিছু নেতা-কর্মী সেই কাজ করে চলেছেন। আশা করছি, অমিত শাহ কলকাতায় এসে এ বিষয়ে দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের বার্তা দেবেন। তার পর যদি তাঁদের টনক নড়ে। আমরাও নজর রেখেছি, সোশ্যাল মিডিয়ায় কে কী পোস্ট করছেন। প্রয়োজনে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হবে।’
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। কিন্তু রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি এই আন্দোলনে সে ভাবে যে সামিল হতে পারেনি, তা নিয়ে জোর রাজনৈতিক চর্চা হচ্ছে। বরং, অনেকেরই বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে বামেদের সক্রিয়তা অনেক বেশি। বিজেপি নেতারা চিকিৎসকদের আন্দোলনে সংহতি জানাতে গেলে তাঁদের বারবার ‘গো ব্যাক’ স্লোগান শুনতে হয়েছে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় বিজেপির একাংশ সোশ্যাল মিডিয়ায় জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনকে আক্রমণ শুরু করেছেন। আর সেটা করতে গিয়েই রাজ্যের শাসক তৃণমূলের সঙ্গে বহু ক্ষেত্রেই মিলে যাচ্ছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি কর্মীদের সুর!
সে জন্যই পরিস্থিতি বেগতিক দেখে নড়েচড়ে বসেছেন রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতারা। দুর্গাপুজোর মধ্যেই রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে রীতিমতো প্রেস বিবৃতি দিয়ে বলতে হয়, ‘আমরা জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের পাশে আছি। ধর্মতলায় তাঁরা আমরণ অনশনে বসেছেন। সেখানে সাধারণ মানুষের সমর্থন জানাতে যাওয়া উচিত।’ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও মঙ্গলবার বলেন, ‘জুনিয়র চিকিৎসকরা দারুণ লড়াই করছেন। তাঁদের হ্যাট্স অফ।’ কিন্তু তার পরেও সোশ্যাল মিডিয়ায় জুনিয়র চিকিৎসকদের খোঁচা দেওয়া বন্ধ করেননি বিজেপি নেতা-কর্মীদের একাংশ।
বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের পাশে আছি। বিজেপির কেউ তাঁদের আক্রমণ করে থাকলে তাঁরা দলবিরোধী কাজ করছেন। আমাদের সল্টলেকের পার্টি অফিসে এসে যারা কাস্তে-হাতুড়ি এঁকে দিয়েছিল, তারা যেমন আন্দোলনের কেউ নয়, তেমনই যারা জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে আক্রমণ করছে, তারাও বিজেপির কেউ নয়।’