এই সময়: এ বছর, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে রাজ্যে বাম-কংগ্রেস জোট করে লড়াইয়ে নেমে মাত্র একটি আসন জিতেছে। মালদা দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী ইশা খান চৌধুরী। বহরমপুরে অধীর চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে মহম্মদ সেলিমের মতো হেভিওয়েট প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন।লোকসভা ভোটের মাস চারেক পরেই অধীরকে সরিয়ে শুভঙ্কর সরকারকে প্রদেশ কংগ্রেসের নতুন সভাপতি করা হয়েছে। সদ্য অধীরকে ঝাড়খণ্ডের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে সিনিয়র পর্যবেক্ষক করেছে কংগ্রেস হাইকমান্ড। এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠেছে, বাংলায় ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের আসন্ন উপনির্বাচনে কি হাত-হাতুড়ির জোট বজায় থাকবে? নাকি বিধানভবন নতুন পথে হাঁটবে?
প্রদেশ কংগ্রেসের নতুন সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের বক্তব্য, ‘উপনির্বাচনের দিন ঘোষিত হয়েছে। যে বিধানসভা কেন্দ্রগুলোয় ভোট হবে, সংশ্লিষ্ট সেই সব জেলার সভাপতিদের বক্তব্য আমরা শুনব। তাঁরা কী চাইছেন, তা জানব। জেলা সভাপতিদের বক্তব্যের ভিত্তিতে আমাদের নির্বাচনী রণকৌশল ঠিক করা হবে।’ আগামী ১৩ নভেম্বর সিতাই, মাদারিহাট, তালডাংরা, নৈহাটি, হাড়োয়া ও মেদিনীপুর বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন।
মুর্শিদাবাদ, মালদা, উত্তর দিনাজপুরের মতো জেলা, যেগুলোকে বলা হয় কংগ্রেসের ট্র্যাডিশনাল জনসমর্থনের ভিত থাকা জেলা, সে রকম কোনও জেলায় এই ৬টির বিধানসভা কেন্দ্রের কোনওটা নেই। তাই, এই উপনির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোট হলেও সেই জোটে কংগ্রেসের কারণে বামেরা লাভবান হবে, এমন সম্ভাবনা কম বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের পর্যবেক্ষণ।
আলিমুদ্দিন স্ট্রিট অবশ্য কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের দরজা খোলা রেখেই চলতে চায়। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলছেন, ‘রাজ্যে তৃণমূল ও বিজেপি-বিরোধী সমস্ত গণতান্ত্রিক-ধর্মনিরপেক্ষ মানুষকে একজোট করা আমাদের ঘোষিত লক্ষ্য। সে ভাবেই ২০২৪ সালে বামপন্থীরা কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে লড়াই করেছে। আমাদের ওই অবস্থানের কোনও পরিবর্তন হয়নি।’ তাঁর সংযোজন, ‘নতুন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জেলা নেতৃত্বের মনোভাব বুঝতে চাইছেন। এটা অবশ্যই তাঁর অধিকার।’
তৃণমূল এ সব বিষয়কে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষের সাফ কথা, ‘ইদানীং সোশ্যাল মিডিয়ায় লাফাচ্ছে যে সিপিএম, তারা, লিখে রাখুন ছ’টি কেন্দ্রেই তৃতীয় অথবা চতুর্থ হবে।’ এই উপনির্বাচনেও মূল লড়াই দুই ফুলের মধ্যে হবে বলে শাসক দলের একাধিক নেতার পর্যবেক্ষণ। কুণাল জানিয়েছেন, উপনির্বাচনে তৃণমূলের লক্ষ্য হলো, প্রতিটি বুথে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পাওয়া। নওশাদ সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) কী করবে, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়।