ছয়ে কত? বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা দুই হলেই খুশি। আরজি কর আবহে রাজ্যের গেরুয়া শিবিরের নেতাদের অনেকেরই ধারণা, হাওয়া ঘুরছে। ফলে ছ’টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে দলের সম্ভাবনা যথেষ্ট উজ্জ্বল। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতারা বঙ্গের বিজেপি নেতাদের সঙ্গে একমত নন। তাঁরা ছয়ের মধ্যে দুই পেলেই খুশি!তা-ও যে জুটবে, সেই নিশ্চয়তাও পাচ্ছেন না সুনীল বনসল, মঙ্গল পাণ্ডের মতো কেন্দ্রীয় নেতারা। মঙ্গলবার রাজ্য বিজেপি নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এই বার্তাই ঠারেঠোরে দিয়েছেন তাঁরা। বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদাররা হাজির না থাকলেও উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক এবং গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীরা।
আগামী ১৩ নভেম্বর রাজ্যের ছ’টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। মঙ্গলবারই নির্বাচন কমিশনের তরফে উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়েছে। ঘটনাচক্রে ওইদিনই রাজ্য বিজেপি নেতাদের সঙ্গে উপনির্বাচনের রণকৌশল ঠিক করতে বৈঠকে বসেন বঙ্গ-বিজেপির তিন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল, মঙ্গল পাণ্ডে এবং অমিত মালব্য। সেখানে বঙ্গ বিজেপি নেতাদের কাছে জানতে চাওয়া হয় এই ছ’টি কেন্দ্রের উপনির্বাচন নিয়ে কতটা আশার আলো দেখছেন তাঁরা।
একইসঙ্গে কোন কেন্দ্রে কীভাবে প্রচার চালানো উচিত তা নিয়েও দলের রাজ্য নেতাদের মতামত জানতে চান বনসলরা। দলীয় সূত্রে খবর, ওই বৈঠকে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা উপ নির্বাচনগুলিতে বিজেপির উজ্জ্বল সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করলেও কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা বুঝিয়ে দিয়েছেন যে ‘মিরাকেল’ কিছু না ঘটলে বিজেপির পক্ষে ছ’টির মধ্যে দু’টির বেশি আসনে জেতা মুশকিল।
বৈঠকে হাজির এক বিজেপি নেতার কথায়, ‘আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাট আমাদের জেতা আসন। তার বাইরে আর একটি আসনে জিততে পারলেও সেটা বঙ্গ-বিজেপির সাফল্য হিসেবে ধরা হবে। মঙ্গলবারের বৈঠকে আমাদের এটা বুঝিয়ে দিয়েছেন বনসলজিরা।’
অতীত রেকর্ড ঘাটলে দেখা যাবে উপ নির্বাচনের ফলাফল সাধারণত শাসক দলের পক্ষেই যায়। তার উপর গত তিন বছরে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল হিসেবে বিজেপি এমন কোনও আন্দোলন সংগঠিত করতে পারেনি, যাতে তারা সাধারণ মানুষের ঢালাও সমর্থন পেতে পারেন। ফলে সেই বাস্তব পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেই বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা উপ নির্বাচন নিয়ে বিশেষ আশাবাদী নন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
যদিও আরজি কর আবহে বাংলা জুড়ে তৃণমূল বিরোধী হাওয়া ভালোই বইছে বলে ধারণা রাজ্য বিজেপির একাংশের। মঙ্গলবারের বৈঠকে সে কথা সুনীল বনসলদের জানিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু আরজি করের আঁচ এত তাড়াতাড়ি গ্রাম-গঞ্জের বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে পড়বে বলে মনে করছেন না বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা।
সূত্রের খবর, বনসল ওই বৈঠকে বলেন, ‘উপ নির্বাচনগুলিতে আমাদের ভোট শতাংশ বাড়ানোর উপর জোর দিতে হবে।’ রাজ্য বিজেপির এক পদাধিকারীর মন্তব্য, ‘আরজি কর আন্দোলনের সুফল ভোটবাক্সে আমরা কতটা পাব তা এখনই বলা কঠিন। কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা আমাদের মূলত ভোট শতাংশ বাড়াতে বলেছেন। সেটাই দলীয় কর্মীদের কাছে পজিটিভ বার্তা হিসেবে যাবে।’