‘শূন্য’র প্রভাব সিপিএমের বুকস্টলে, আমজনতার সাড়া না পেলেও লক্ষাধিক বিক্রির দাবি নেতৃত্বের
প্রতিদিন | ১৭ অক্টোবর ২০২৪
রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: পুজোর কদিন রাজ্যজুড়ে সিপিএমের বুক স্টলে ভিড় হল না আমজনতার। ক্যাডার পরিবেষ্টিত হয়েই রইল স্টলগুলি। আর জি কর কাণ্ডের আবহে বুক স্টলগুলি এবার অন্য মাত্রা পাবে বলে আশা ছিল আলিমুদ্দিনের। কিন্তু পার্টির কর্মী, সমর্থক ছাড়া বই কেনায় আমজনতার কোনও আগ্রহ দেখা যায়নি বলেই খবর। সিপিএম সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, রাজ্যজুড়ে তাদের বইয়ের স্টলে চলবে আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদও। কিন্তু দু,একটি স্টল ছাড়া প্রতিবাদের ছবি সেভাবে কোথাও দেখা যায়নি। পাশাপাশি বুকস্টলগুলির প্রতি আমজনতার কোনও টানও ছিল না।
কলকাতার পাশাপাশি দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি-সহ বিভিন্ন জেলার চিত্র এমনটাই। একমাত্র যাদবপুর বুক স্টলে অবশ্য কিছুটা ভিড় ছিল। কারণ, যাদবপুরের ৮বি বুক স্টলই কিছুটা প্রভাব ফেলে। এই স্টলের উদ্বোধনও করেছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। সূত্রের খবর, কলকাতা শহরে সিপিএমের বুক স্টল ছিল ১০০টির বেশি। আর সারা রাজ্যজুড়ে হাজারের কিছু বেশি স্টল হয়েছিল বলে পার্টি নেতৃত্বের দাবি। মূলত এরিয়া কমিটির উদ্যোগেই স্টল হয়। একটি এরিয়া কমিটিতে একাধিক বুক স্টলও হয়েছিল এবার। কিন্তু স্থানীয় নেতৃত্ব থাকলেও সেই স্টল নিয়ে পুজোয় সাধারণ দর্শনার্থীদের কোনও উৎসাহই ছিল না।
সিপিএমের এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর লেখা বই বিক্রি হয়েছে। বই কিনেছেন মূলত পার্টির কর্মী, সমর্থকরা। ক্রেতার তালিকায় কিছু ঘনিষ্ঠ দরদীরাও ছিলেন। আর কিছু বই ‘পুশ সেল’ করতে হয়েছে। যেটা প্রতিবারই করতে হয়।’’ সিপিএম নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, লক্ষাধিক টাকার বই বিক্রি হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন, ভোটের ফলাফলে রাজ্যে শূন্য। লোকসভা থেকে বিধানসভায় ? সিপিএম শূন্য। তখন এত টাকার বই বিক্রি কোন হিসেবে? দাবি নিয়ে প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে। সিপিএম তাদের বুক স্টলগুলিতে মার্কসীয় সাহিত্যের নানা বই থাকে। এছাড়া, দলীয় মুখপত্র ‘গণশক্তি’ থেকে শুরু করে দলের ছাত্র ও যুব সংগঠনের মুখপত্রের শারদ সংখ্যাও বিক্রি হয়। উৎসবের মরশুমে বইয়ের স্টল করার রীতি রাজ্য থেকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরেও ছাড়েনি সিপিএম। কিন্তু ভোটে ধরাশায়ী হওয়ার প্রভাব যে এবারও বই বিক্রিতেও পড়েছে তা আড়ালে হলেও মেনে নিচ্ছেন দলের একাধিক নেতা-কর্মী।
পাশাপাশি আর জি কর আবহে এবার সিপিএমের বুক স্টলকে অন্য মাত্রা দেওয়ার চেষ্টা হলেও তার প্রভাব পড়েনি জনমানসে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, সিপিএমের ঝান্ডাকে এখনও মানুষ প্রত্যাখ্যানের চোখেই দেখছে। আর তাই ঝান্ডা ছাড়া বর্তমানে আর জি কর আবহে ডাক্তারদের আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে সাধারণ মানুষকে প্রভাবিত করতে চাইছে সিপিএম। এদিকে, উৎসবে নেই বলেও মণ্ডপের কাছাকাছি জনসমুদ্রের ছোঁয়া নেওয়ার চেষ্টায় সিপিএমের স্টল খুলে বসে থাকা নিয়ে কটাক্ষ করেছে তৃণমূলও।