• ছাত্রীর দগ্ধ দেহ উদ্ধার কৃষ্ণনগরে, ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে ধৃত প্রেমিক
    বর্তমান | ১৮ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: বুধবার সকালে কৃষ্ণনগর শহরে এক স্কুলছাত্রীর অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধারের ঘটনায় রাজ্যজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ঘটনাস্থল কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানার অন্তর্গত রামকৃষ্ণপাড়া। ভোরের দিকে স্থানীয় বাসিন্দারা পুজো মণ্ডপের পাশেই ওই ছাত্রীর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। ছাত্রীর মাথা থেকে কোমর পর্যন্ত পুড়ে গিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিস সুপারের অফিস মাত্র ৩০০ মিটার দূরে। এমন জায়গায় মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে তার পরিবারের অভিযোগ। পরিবারের অভিযোগের তির ছাত্রীর প্রেমিক রাহুল বোসের দিকে। ইতিমধ্যেই কোতোয়ালি থানার পুলিস তাকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিস মৃতদেহ উদ্ধার করে প্রথমে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পরবর্তীকালে পরিবারের দাবি মেনে আজ বৃহস্পতিবার কল্যাণীর জেএনএমে ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছে। কৃষ্ণনগর পুলিস জেলার এসপি অমরনাথ কে বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই একজনকে গ্রেপ্তার করেছি। ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত কি না, তা তদন্ত করে দেখছি। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, মৃত ছাত্রী ও ধৃতের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল।’

    কৃষ্ণনগর রামকৃষ্ণপাড়ায় সদ্য দুর্গাপ্রতিমার নিরঞ্জন হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে লক্ষ্মীপুজোর প্রস্তুতির কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই পুজো মণ্ডপের পাশে ছাত্রীর অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনাস্থলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিল জামাকাপড়ের পোড়া অংশ। মণ্ডপের উপরের কাপড়ও অনেকটা পুড়ে যায়। পুজো কমিটির সম্পাদক চন্দনা দাস বলেন, ‘আমরা সকালে উঠে দেখি, মৃতদেহ পড়ে আছে। এই ঘটনার পর পুজো করব না।’

    মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষ্ণনগরের লেডি কারমাইকেল স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী সে। পড়াশোনা, নাচ-গান সবেতেই ভালো ছিল। কালীনগরে বাড়ি। আট মাস ধরে স্থানীয় যুবক রাহুল বোসের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় তার। এই সম্পর্কের কথা তাদের পরিবারও জানত। পাঁচ মাস আগে তার সঙ্গেই ওই ছাত্রী বেঙ্গালুরু চলে যায়। একমাস পর ফিরে আসে তারা। অষ্টমীর দিন ছাত্রীর বাড়িতেই দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। ওই ছাত্রী রাহুলের সঙ্গে ঘুরতে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু রাহুল আপত্তি জানায়। বচসার সময়ে সকলের সামনেই রাহুল ওই ছাত্রীকে ‘শেষ খেলা আমি দেখাব’ বলে হুমকি দিয়েছিল বলে মেয়েটির পরিবারের দাবি। 

    পরিবারের এক সদস্যের কথায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ রাহুলের সঙ্গে ঘুরতে বের হয় ওই ছাত্রী। সাড়ে ৭টা নাগাদ বাড়ির লোকের সঙ্গে তার কথা হয়। তখন ওই ছাত্রী জানায়, স্থানীয় এক রেস্তরাঁয় তারা খাওয়াদাওয়া করছে। সেইমতো পরিবারের লোকজন সেখানে যায়। কিন্তু তাদের রেস্তরাঁয় পাওয়া যায়নি। তারপর থেকেই ওই ছাত্রীর ফোন সুইচড অফ ছিল। ঘটনার ঠিক আগে ওই ছাত্রী নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে লেখে, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়, আমি নিজেই দায়ী, তোমরা সবাই ভালো থেকো।’ যদিও ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, এই পোস্ট রাহুলই করেছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)