একাধিক প্রেম, নাকি গাড়ি কেনার জন্য আর্থিক লেনদেন নিয়ে বিবাদ?
বর্তমান | ১৮ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: একাধিক প্রেম, নাকি গাড়ি কেনার জন্য আর্থিক লেনদেন নিয়ে বিবাদ? কৃষ্ণনগর ছাত্রী খুনের আটচল্লিশ ঘণ্টা পরেও এই প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। ছাত্রীর প্রেমিক রাহুল বসু গ্রেপ্তার হয়েছে। তবু খুনের কারণ নিয়ে জট কাটতে চাইছে না। যার ফলে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার অভিযুক্তকে কৃষ্ণনগর আদালতে তোলা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিচারক অভিযুক্তকে সাতদিনের পুলিস হেফাজতে পাঠান। পরিবারের দাবি মেনে এদিন কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে ছাত্রীর মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্ত হয়। আগুনে পুড়েই ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান করছে পুলিস। ছাত্রীর দগ্ধ শরীরে কেরোসিনের গন্ধ ও শ্বাসনালীতে কার্বনের অস্তিত্ব মিলেছে। যদিও ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট এলে তবেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসা যাবে বলে দাবি পুলিসের।
এদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন এডিজি(দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার, ডিআইজি(সিআইডি) সোমা বিশ্বাস সহ পুলিসের শীর্ষ আধিকারিকরা। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য কৃষ্ণনগর পুলিস জেলার এসপি অমরনাথ কে-র নেতৃত্বে সিট গঠন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করার জন্য বিশেষ প্রতিনিধি দল আসে। এডিজি সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, ‘মৃতার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। রাহুল বসু নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে পুলিসি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পরিবারের চাহিদা অনুযায়ী, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মৃতার ময়নাতদন্ত করা হয়। আমাদের তদন্ত চলছে। যার জন্য একটা স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম গঠন করা হয়েছে। ঘটনার নেপথ্যে সমস্ত সম্ভাব্য কারণ আমরা খতিয়ে দেখছি।’
প্রসঙ্গত, বুধবার ভোরের দিকে কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানার অন্তর্গত রামকৃষ্ণপাড়া এলাকা থেকে ছাত্রীর অগ্নিদগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিসের তরফ থেকে গণধর্ষণের মামলা রুজু করা হয়। দেহ উদ্ধারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ছাত্রীর প্রেমিক রাহুল বসুকে পুলিস বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। ওই যুবককে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিস। পাশাপাশি মৃতা ছাত্রী ও অভিযুক্ত যুবকের মোবাইল ফোন ট্রেস করা হয়। তাতে সন্দেহজনক বেশকিছু তথ্য উঠে আসে। যদিও তদন্তের খাতিরে পুলিস এখনই তা সামনে আনতে নারাজ। তবে ফোন ঘেঁটে উভয়েরই একাধিক সম্পর্কের কথা জানা গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। তারা একে অপরের অন্য সম্পর্কের কথা জেনেও গিয়েছিল। যা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে দু’জনের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছিল। ধৃত যুবকের মোবাইল ফোন ঘেঁটে একাধিক বান্ধবীর সঙ্গে কথোপকথনের বিষয়টিও পুলিস জানতে পেরেছে।