নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: দুর্গাপুজোর রেশ কাটতে না কাটতেই আরও এক গৌরবময় অধ্যায়ে প্রবেশ করতে চলেছে কলকাতা। আগামী বৃহস্পতিবার ৪০ বছর পূর্ণ করতে চলেছে নর্থ-সাউথ মেট্রো। মহানগরীর পাতালপথ সাক্ষী থেকেছে দেশের প্রথম মেট্রো পরিষেবার। ১৯৮৪ সালের ২৪ অক্টোবর এসপ্ল্যানেড থেকে ভবানীপুর (নেতাজি ভবন) রুটে প্রথম যাত্রী পরিষেবা চালু হয়েছিল মেট্রো রেলের। সুদীর্ঘ চার দশকের এই যাত্রাপথে বাংলার গণ্ডি পেরিয়ে দেশ-বিদেশের কোটি কোটি যাত্রীর নস্টালজিয়ায় জড়িয়ে কলকাতা মেট্রো। এবার তার ৪০তম জন্মদিনকে স্মরণীয় করে রাখতে উদ্যোগ নিয়েছে রেল। জানা গিয়েছে, ২৪ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার মেট্রো সম্পর্কিত বিশেষ প্রদর্শনী-ডাক টিকিট প্রকাশ-সিনেমার জমজমাট অনুষ্ঠান হতে চলেছে। সবমিলিয়ে কলকাতার গর্বের এই যানটির জন্মদিবসকে সামনে রেখে ফের উৎসব শুরুর প্রস্তুতি শহরের।
জানা গিয়েছে, আজ থেকে সপ্তাহব্যাপী ৪০তম জন্মদিন পালনের পরিকল্পনা হয়েছে। ঐতিহাসিক দিনটি স্মরণীয় করতে আগামী বৃহস্পতিবার মেট্রোর বিশেষ লোগো প্রকাশিত হবে। তার ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে হেরিটেজ ওয়াক। থাকবে বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। পাশাপাশি মেট্রোর সেকাল থেকে একাল এক ফ্রেমে ধরতে তৈরি হয়েছে বিশেষ ফিল্ম। যা যাত্রীদের দেখানো হবে। ওইদিনই কলকাতার বিশেষ কভার ও স্ট্যাম্প প্রকাশিত হবে।
শুরুতে মাত্র সাড়ে তিন কিলোমিটার পথে প্রথম যাত্রা শুরু করেছিল মেট্রো। তারপর কয়েক দফায় সম্প্রসারিত হয়ে সংশ্লিষ্ট রুটটি বর্তমানে কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত প্রায় ৩২ কিলোমিটার বিস্তৃত। এর পাশাপাশি বর্তমানে শহরের বুকে চালু পাঁচটি ভিন্ন মেট্রো রুট। খাতায় কলমে প্রায় ৫৮ কিলোমিটার মেট্রো পথে যাত্রীরা সফর করেন। রেল কর্তাদের একাংশের অবশ্য দাবি, দেশের অন্যান্য শহরে কলকাতার কয়েক দশক পর মেট্রো চালু হয়। কিন্তু খুব অল্প সময়ের মধ্যে সেখানে নির্ধারিত কাজ শেষ করে একের পর এক মাইল স্টোন স্থাপন হয়ে যায়। কিন্তু একমাত্র ভারতীয় রেলের আওতায় থাকা এই শহরের মেট্রো প্রকল্পগুলিই ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে পড়ে রয়েছে। মেট্রোর অবসরপ্রাপ্ত এক শীর্ষকর্তার কথায়, ‘৪০ বছরের পুরনো এই মেট্রো পথে প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ হয়নি। তাই সাম্প্রতিক অতীতে কবি সুভাষ-দক্ষিণেশ্বর রুট যাত্রী দুর্ভোগের অন্যতম লাইন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ গাফিলতি সংশোধন করে মেট্রোর হৃত গৌরব ফিরিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছেন ওই প্রাক্তনী।