বর্ষা বিদায়ের পর নতুন নিম্নচাপ নিয়ে দুশ্চিন্তা, জল্পনা ঘূর্ণিঝড়ের
বর্তমান | ১৮ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বর্ষা বিদায়ের পরেও কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়ে বেশি মাত্রায় বৃষ্টি অব্যাহত আছে। আজ শুক্রবারও এই পরিস্থিতি থাকবে। এরই মধ্যে দুশ্চিন্তা বাড়াল একটি নিম্নচাপের খবর। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ২২ অক্টোবর মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হবে। সেটি উত্তর-পশ্চিম অভিমুখে শক্তি বাড়াবে। বর্ষা বিদায়ের পর অক্টোবর-নভেম্বরে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির প্রবণতা থাকে। সমুদ্রে তৈরি নিম্নচাপই ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেয়। বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপগুলির সূচনা হয় উত্তর আন্দামান সাগরে। এবারেও তাই হচ্ছে। আগামী সোমবার উত্তর আন্দামান সাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে চলেছে। দু’দিনের মধ্যে সেটিই নিম্নচাপ হিসেবে আসবে মধ্য বঙ্গোপসাগরে।
তারপরও শক্তি বৃদ্ধি করে নিম্নচাপটি কোন দিকে যাবে তার উপরই নির্ভর করছে এর প্রভাব কোথায় বেশি পড়বে। আলিপুর আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা হবিবুর রহমান বিশ্বাস জানান, তামিলনাড়ু থেকে মায়ানমার পর্যন্ত বিস্তৃত বঙ্গোপসাগর উপকূলের যেকোনও জায়গা দিয়েই স্থলভূমিতে এটি ঢুকবে। গতিপ্রকৃতির উপর নজর রাখছে আবহাওয়া দপ্তর।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বর্ষা-পরবর্তীকালে নভেম্বরের গোড়ার দিক পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে কোনও শক্তিশালী নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে সেটির উত্তর অন্ধ্র, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশ থেকে মায়ানমার উপকূলের দিকে ধেয়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। নভেম্বরের শেষদিক থেকে ডিসেম্বরের শুরুতে কোনও নিম্নচাপ-ঘূর্ণিঝড় বঙ্গোপসাগরে তৈরি হলে সেটির তামিলনাড়ু ও দক্ষিণ অন্ধ্র উপকূলের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এর ব্যতিক্রমও হয়। সাম্প্রতিক অতীতেও অক্টোবর-নভেম্বরে ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশ ও মায়ানমার উপকূলে জোরালো ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। ১৯৯৯ সালে অক্টোবরের শেষে ওড়িশায় আছড়ে পড়েছিল বিধ্বংসী সুপার সাইক্লোন।
বুধবার থেকে কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার নানা জায়গায় বজ্রগর্ভ মেঘ সঞ্চার হয়ে বেশি পরিমাণে যে বৃষ্টি হচ্ছে তার কারণ বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া একটি বিপরীত ঘূর্ণাবর্ত। এটি থেকে শক্তিশালী বজ্রমেঘ তৈরি হচ্ছে। শনিবার থেকে এই প্রবণতা অবশ্য কমতে পারে।