• বুধবারের বৃষ্টিতে এখনও জলমগ্ন বরানগরের বিস্তীর্ণ এলাকা, ক্ষোভ
    বর্তমান | ১৮ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: ঘণ্টা খানেক বৃষ্টি। অথচ ১৫ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে জলমগ্ন বরানগরের বিভিন্ন এলাকা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নতুন করে বৃষ্টি হওয়ায় জল-যন্ত্রণা আরও বেড়েছে। ফের বিটি রোডের বারাকপুরগামী লেনের একাংশ জলের তলায় চলে গিয়েছে। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। কয়েক কোটি টাকা ব্যয় করে চলতি বছরে নতুন ম্যানহোল ও গালিপিট তৈরির পরও কেন এই ঘটনা ঘটছে তা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। কাউন্সিলারদের একাংশও ওই কাজ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। যদিও পুরসভার তরফে, জানানো হয়েছে, কোথাও কোথাও ম্যানহোল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা ডুবুরি এনে খতিয়ে দেখবে।


    গত বছর সিঁথির মোড় থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত ৫২টি ম্যানহোল ও গালিপিট উন্নীতকরণের কাজ হয়। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সে কাজ সম্পন্ন হয়। পুরসভার তরফে জানানো হয়েছিল, এই কাজ সম্পন্ন হলে বরানগরের বিটি রোড সহ সংলগ্ন এলাকা জমা জলের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবে। কিন্তু ওই কাজ শেষের পর নতুন নতুন সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ। 


    বুধবার সন্ধ্যায় বরানগর এলাকায় ঘণ্টা খানেক ভারী বৃষ্টি হয়। তাতে সিঁথির মোড় থেকে ডানলপ পর্যন্ত বিটি রোড সহ আশপাশের এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল। রাতভর ওই জল দাঁড়িয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকালে বিভিন্ন এলাকা থেকে জল নামলেও অনন্যা সিনেমা হল, মল্লিক কলোনি, ঘোষ পাড়া, গিরিশ ঘোষ স্ট্রিট সহ বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন ছিল। বিটি রোডের সার্ভিস রোডও জলের তলায় ছিল। এদিন দুপুরেও ওই জল নামেনি। সাধারণ মানুষকে নর্দমার নোংরা জল ঘেঁটে যাতায়াত করতে হয়েছে। লক্ষ্মী আরাধনার রাতেও দুর্ভোগ পিছু ছাড়েনি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফের বৃষ্টির কারণে নতুন করে বহু এলাকায় হাঁটু সমান জল জমেছে। এদিন দুপুরে বিটি রোডের ম্যানহোল পরিষ্কারের চেষ্টা করা হলেও তাতে লাভ হয়নি। জলমগ্ন মল্লিক কলোনির বাসিন্দা তথা পুরসভার স্বাস্থ্যদপ্তরের সিআইসি রামকৃষ্ণ পাল বলেন, কয়েক কোটি টাকা দিয়ে নতুন ম্যানহোল তৈরি ও তা পরিষ্কারের কাজ করে কি লাভ হল? আগে যেখানে চার ঘণ্টায় জল নামত, এখন সেখানে এক দিনেও জল নামছে না। আদৌ কতটা কাজ হয়েছে তা খতিয়ে দেখা উচিত। বরানগর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান দিলীপ নারায়ণ বসু বলেন, মল্লিক কলোনি বা আশপাশের এলাকায় ম্যানহোলের মধ্যে বড় কোনও ব্লকেজ তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিনভর চেষ্টা করেও তা চিহ্নিত করা যায়নি। তবে ন’পাড়া-লোল্যান্ড সহ আশপাশের এলাকায় জল বৃষ্টির ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে বাগজোলা খালে নেমে যাচ্ছে।


    এদিকে বৃহস্পতিবার  বারাসত ও মধ্যমগ্রামে বিকেল সাড়ে চারটে থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত প্রায় ঘণ্টা খানেক বর্জ্র-বিদ্যুৎ সহ প্রবল বৃষ্টি হয়। তবে জল জমেনি। ওই একই সময়ে বৃষ্টি হয়েছে বারাকপুর ও নৈহাটিতে। বারাকপুর ওয়্যারলেস মোড় রবীন্দ্রপল্লি সহ বেশ কিছু জায়গায় জল জমে যায়। বিকেলেই অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে এলাকা। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তেমন বৃষ্টি হয়নি। হাওড়ায় তেমন বৃষ্টির খবর পাওয়া না গেলেও হুগলির ব্যান্ডেল ও শ্রীরামপুরে অল্প বৃষ্টি হয়েছে। সর্বত্র আকাশ কালো মেঘে ঢাকা ছিল।
  • Link to this news (বর্তমান)