চাকদহে লক্ষ্মীপুজোর জাঁকজমক হার মানিয়ে দেয় দুর্গাপুজোকেও
বর্তমান | ১৮ অক্টোবর ২০২৪
সংবাদদাতা, কল্যাণী: চাকদহ ব্লকের দরাপপুরের বারোয়ারি লক্ষ্মীপুজো জাঁকজমকে হার মানায় দুর্গাপুজোকেও। এখানকার লক্ষ্মীপুজোর নজরকাড়া থিম টেক্কা দেয় একে অপরকে। বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে এই লক্ষ্মীপুজো। থিমে কোথাও ব্যবহার করা হয়েছে পাট, তো কোথাও পাটকাঠি। কোথাও আবার মাটির পাত্র ব্যবহার করে মণ্ডপ তৈরি হয়েছে। পুজো উপলক্ষে এখানে বসে মেলা। এক কথায়, দুর্গার পরিবর্তে তাঁর মেয়ে লক্ষ্মীকে নিয়েই বেশি মাতামাতি এখানে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দেশভাগের আগে ঢাকার পূর্বাইল থানার জয়দেবপুর এলাকায় এই বারোয়ারি লক্ষ্মীপুজো ও সেই উপলক্ষে মেলার চল ছিল। কিন্তু দেশভাগের পর ওই এলাকা থেকে বহু মানুষ এই দেশের চাকদহে চলে আসেন। তবে তাঁদের মধ্যে উৎসবের সেই টান রয়ে গিয়েছিল। সেই ভাবনা থেকেই স্থানীয় একটি বাড়িতে প্রথম লক্ষ্মীপুজো শুরু হয়। তারপর তা শুরু হয় বাড়িতে বাড়িতে। ধীরে ধীরে শুরু হয় বারোয়ারি লক্ষ্মীপুজোও। বর্তমানে তা সর্বজনীন।
চাকদহ শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে চাকদহ ব্লকের দরাপপুর সহ বল্লভপুর, নেতাজি বাজার, চৌগাছা এলাকায় পাড়ায় পাড়ায় শতাধিক বারোয়ারি লক্ষ্মীপুজো হয়। পুজো উপলক্ষে প্রথমে স্থানীয় মরালী নদীর তীরে মেলা বসেছিল। পরে তা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। পুজোর আয়োজন নিয়ে বারোয়ারী পুজো কমিটিগুলির মধ্যে রীতিমতো টক্কর চলে। এখানকার লক্ষ্মীপুজো ও মেলা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা আসেন। মেলা থাকে প্রায় এক সপ্তাহ। কোনরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে মোতায়েন থাকে প্রচুর পুলিস।
কথিত আছে অতীতে হ্যাজাকের আলোতে এই অঞ্চলে মেলা চলত। পুজোর পাশাপাশি প্রতিমা বিসর্জন নিয়েও উন্মাদনা থাকে এখানে। স্থানীয় বারোয়ারি লক্ষ্মীপুজোর এক উদ্যোক্তা সুমন বিশ্বাস বলেন, আমাদের এখানে দুর্গাপুজোয় তেমন উন্মাদনা থাকে না। আমাদের আনন্দ সবটাই লক্ষ্মীপুজোকে কেন্দ্র করে। কর্মসূত্রে পরিবার ছেড়ে যারা দূরে থাকেন, তারাও দুর্গাপুজোর পরিবর্তে এই সময় ছুটিতে বাড়ি ফেরেন। সব মিলিয়ে লক্ষ্মীপুজোয় জমজমাট থাকে আমাদের এলাকা।