এই সময়, ব্যারাকপুর ও নৈহাটি: দলীয় কাউন্সিলাররা কেউ কেউ নিজেকে কেউকেটা ভাবছেন। এ সব ছেড়ে তাঁদের মানুষের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার পরামর্শ দিলেন ব্যারাকপুরের তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিক। একই সঙ্গে নৈহাটি বিধানসভার উপনির্বাচন নিয়েও জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু করেছে শাসকদল।বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুর সুকান্ত সদনে তৃণমূল কংগ্রেস আয়োজিত বিজয়া সম্মিলনীতে বক্তব্য রাখার সময় পার্থ বলেন, ‘আমরা বড্ড বেশি কাউন্সিলারমুখী হয়ে গেছি। কাউন্সিলাররাই ওয়ার্ডের দায়িত্ব সামলান, ফলে সংগঠনের ভূমিকা অনেকটাই কম হয়ে গিয়েছে। তার মানে কাউন্সিলারের উপর যদি মানুষের রাগ থাকে সবটা দলের উপর এসে পড়বে। তাই সংগঠনকে জোরদার করতে হবে।’
এর পরই কাউন্সিলারদের উদ্দেশে সাংসদের সংযোজন, ‘মানুষকে একটু সময় দিতে হবে। আর তো একটা বছর। ২০২৬ এ বিধানসভা নির্বাচন। একটু মানুষের বাড়িতে বাড়িতে ঘুরুন।’ সাংসদের কটাক্ষ, ‘আমি দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি আপনাদের অনেকে এখনও পাড়ায় শুভ বিজয়া করে উঠতে পারেননি।’
কাউন্সিলারদের উদ্দেশ্য করে পার্থ বলেন, ‘আগে আমি যখন পাড়ার ছেলে ছিলাম তখন প্রণাম করতাম, আর এখন আমি কাউন্সিলার হয়ে কেউকেটা হয়ে গেছি। তাই আর প্রণাম করতে লাগে না এটা যারা ভাবছেন তারা ভুল করছেন।’ এ দিনের মঞ্চ থেকে ব্যারাকপুরের জন্য উত্তম দাস এবং টিটাগড়ের টাউন সভাপতি ওমপ্রকাশ সাউকে বুথ কমিটি তৈরি করার জন্য বলেন সাংসদ।
গত মঙ্গলবারই রাজ্যের ছ’টি বিধানসভার উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়েছে। ওই তালিকায় রয়েছে নৈহাটি বিধানসভারও নাম। ভোট ঘোষণা হতেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। বসে নেই নির্বাচন কমিশনও। নির্বাচনী প্রস্তুতির খুটিনাটি নিয়ে বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুর মহকুমাশাসকের অফিসে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে বিশেষ পর্যালোচনা বৈঠক হয়। মহকুমাশাসক সৌরভ বারিকের নেতৃত্বে মিটিং হয়।
কমিশনের নির্দেশ মেনে আজ, শুক্রবার থেকে মনোনয়ন জমা নেওয়া শুরু হবে। ২৫ অক্টোবর জমা দেওয়ার শেষ দিন। ২৮ তারিখ স্ক্রুটিনি এবং ৩০ অক্টোবর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। ঠিক হয়েছে পানপুর মাখনলাল হাইস্কুলে ডিসিআরসি সেন্টার হবে এবং সেখানেই ভোট গণনা হবে৷ অশান্তি এড়াতে প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং ওয়েব কাস্টিং থাকবে বলেও রাজনৈতিক দলগুলিকে আশ্বস্ত করা হয়েছে এ দিনের বৈঠকে।
এ দিকে ভোট ঘোষণা হতেই ময়দানে নেমে পড়েছে তৃণমূল। প্রার্থীর নামের জায়গা ফাঁকা রেখে ইতিমধ্যেই দেওয়াল লিখনের কাজ তারা শুরু করে দিয়েছে। এ দিকে আরজি কর ইস্যুকে সামনে রেখে সিপিএম এবং বিজেপি নৈহাটি আসন উদ্ধার করতে প্রার্থী তালিকায় বিশেষ নজর দিচ্ছে। যদিও নৈহাটি শহর তৃণমূল সভাপতি সনৎ দে বলেন, ‘বিরোধীদের কোনও ফন্দি কাজ করবে না। নৈহাটির মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে ছিল, আছে এবং থাকবে শুধু নয়, জয়ের মার্জিন আরও বাড়বে।’
শুক্রবার নৈহাটিতে দু’টি মিটিং ডেকেছে তৃণমূল। একটি হবে কাঁপা চাকলা পঞ্চায়েত এলাকায় এবং আর একটি হবে নৈহাটির ঐকতান মঞ্চে। সেখানে আসন্ন উপনির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।