ক্রমশ বাড়ছে তেলের দাম। অথচ, ফেরি সার্ভিসের সর্বোচ্চ ভাড়া এখনও পড়ে রয়েছে ১২ টাকায়। তা ছাড়া এই ফেরি নদীর জল দূষণেরও প্রধান কারণ বলে দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছেন পরিবেশ কর্মীরা। এই পরিস্থিতিতে জল দূষণ ঠেকিয়েই ফেরি সার্ভিসকে বাঁচিয়ে রাখতে এবং যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে ব্যাটারি চালিত জলযান নামাতে চলেছে রাজ্য পরিবহণ দপ্তর। এই পরিকল্পনায় পুর দপ্তরও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী জানুয়ারি মাসেই দু’টি রুটে পরিবেশবান্ধব জলযান পরিষেবা চালু হয়ে যাবে বলে দাবি পরিবহণ দপ্তরের কর্তাদের।সরকারি সূত্রে খবর, প্রথম ধাপে মূলত যাত্রী বেশি হয় এমন রুটেই এই ব্যাটারি চালিত ফেরি সার্ভিস চালু হবে। এ ছাড়া, নতুন করে কোন রুটে এই সার্ভিস চালু করা যায়, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে পরিবহণ দপ্তরের অফিসারদের। বর্তমানে যে রুটগুলিতে যাত্রী সংখ্যা বেশি হয়, তার মধ্যে অন্যতম হলো হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন ফেরিঘাট থেকে বাবুঘাট, চাঁদপাল ঘাট, আর্মেনিয়ান ঘাট, শোভাবাজার, বাগবাজার রুট। প্রথম ধাপে ১৫টি ফেরি নামানো হবে।
ফেরিঘাটগুলিতে চার্জিং স্টেশনও তৈরি করা হবে। বাতানূকুল এই ভেসেলগুলিতে থাকবে বায়ো-টয়লেট, অত্যাধুনিক সিটও। ১৫টি ফেরির মধ্যে ছোট-বড় দু’ধরনের জলযানই থাকবে। বড় ফেরিতে সর্বোচ্চ ২৫০ জন উঠতে পারবেন। ছোট ফেরিতে উঠতে পারবেন প্রায় ১০০ জন যাত্রী। তবে এই অত্যাধুনিক ফেরির ভাড়া কী হবে, তা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন,‘শহর ও শহরতলির নিত্যযাত্রীদের একটা বড় অংশ যাতায়াত করেন জলপথে। তাছাড়া যানজট এড়ানোর জন্য গন্তব্যে পৌঁছতে সুবিধাজনক মাধ্যম হলো ফেরি সার্ভিস। সে দিকে নজর রেখেই ব্যাটারি চালিত জলযান নামানোর সিদ্ধান্ত।’
হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমিতির নির্দেশক অজয় দে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই ফেরির ভাড়া বাড়ানো হয়নি। কিন্তু ডিজ়েলের দাম ক্রমশ বেড়ে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে ব্যাটারি চালিত ফেরি নামালে যাত্রীরা যেমন স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারবেন, তেমনই খরচও কমবে অনেকটাই।’ পরিবহণ দপ্তরের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে পরিবেশ বিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘ডিজেল চালিত জলযান থেকে যে ধোঁয়া বের হয়, তা হার্টের সমস্যার পাশাপাশি ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকিও অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। পরিবেশবান্ধব জলযান নামালে বায়ু এবং জল দূষণও অনেকটাই ঠেকানো যাবে।’