উন্নয়নে গতি আনতে ডিজিটাল মৌজা ম্যাপ, সক্রিয় রাজ্য সরকার
এই সময় | ১৮ অক্টোবর ২০২৪
এই সময়: বাংলা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে গ্রাম, শহর, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, জমি, নদী, খালবিল, কল-কারখানা, বাড়িঘর-সহ অগুনতি জিনিস। সবকিছুরই ভৌগোলিক অবস্থান জানতে সারা রাজ্যের ডিজিটাল মৌজা ম্যাপ তৈরি করছে রাজ্য সরকার। নবান্ন সূত্রে খবর, উন্নয়নের কাজকে ত্বরান্বিত করতে উপগ্রহ চিত্রের সাহায্যে প্রতিটি মৌজার নতুন ভৌগোলিক ম্যাপ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিরেক্টর অফ ল্যান্ড রেকর্ডস এবং সার্ভে বিভাগ।সরকারি সূত্রে খবর, রাজ্যে মোট ৪২ হাজার ৩০২টি মৌজা রয়েছে। এ জন্য ৬৮ হাজার ৪৫৩টি ভৌগোলিক ম্যাপ তৈরি করা হবে। একটা সময়ে ভূমি জরিপ বিভাগের আধিকারিকরা এলাকায় ঘুরে ঘুরে এই ম্যাপ তৈরি করতেন। ১৮৮৮ থেকে ১৯৪০ সালের মধ্যে প্রথম ‘সিএস ম্যাপ’ তৈরি হয়।
সেটিকে সংশোধন করে ১৯৫৪-১৯৬২ সালের মধ্যে তৈরি হয় নতুন মৌজা ম্যাপ। যা ‘আরএস ম্যাপ’ নামে পরিচিত। এই মানচিত্রকে পরিমার্জন করে তৈরি হয় ‘এলআর ম্যাপ’। যার কাজ শুরু হয়েছিল ১৯৭২ সাল নাগাদ। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যের প্রায় সর্বত্রই আগের ভৌগোলিক অবস্থান পাল্টাচ্ছে।
ভূমি সংস্কার দপ্তরের এক শীর্ষকর্তার ব্যাখ্যা — ‘এলআর ম্যাপ তৈরি হওয়ার পর গত ক’দশকে রাজ্যের ভৌগোলিক ছবি অনেকটাই বদলে গিয়েছে। যেখানে এক সময়ে গ্রাম ছিল, সেখানে এখন শহর। কোথাও আবার শিল্পাঞ্চল তৈরি হয়েছে। চাষের জমি ভরাট করে তৈরি হচ্ছে বাড়িঘর, কল-কারখানা। মালদা, মুর্শিদাবাদের মতো জেলায় নদী ভাঙনের জেরে বহু জনপদ তলিয়ে গিয়েছে। ফলে রাজ্যে যে কোনও উন্নয়ন সংক্রান্ত পরিকল্পনার কাজ করতে গিয়ে বারবার হোঁচট খেতে হচ্ছে সরকারকে।’
তিনি জানান, বর্তমানে রাজ্যের হাতে যে ‘এলআর ম্যাপ’ রয়েছে, তাকে ডিজিটাইজ় করা হলেও সেখান থেকে অনেক ক্ষেত্রেই নিখুঁত ছবি মেলে না। সে কারণেই হাই রেজ়োলিউশন স্যাটেলাইট ইমেজের সাহায্যে নতুন মৌজা-ম্যাপ তৈরি করা হবে। এতে এখন কোথায় ঠিক কী আছে, তার প্রকৃত অবস্থান জানা যাবে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, কলকাতা পুর-এলাকা বাদে গোটা রাজ্যের জন্যই স্যাটেলাইট ম্যাপ তৈরি হবে। প্রথম ধাপে হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং পূর্ব বর্ধমান জেলায় তৈরি হবে এই ডিজিটাল মৌজা ম্যাপ। দ্বিতীয় ধাপে যথাক্রমে পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, নদিয়া, উত্তর চব্বিশ পরগনা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা এবং তৃতীয় ধাপে আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কালিম্পং, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা ও মুর্শিদাবাদে এই কাজ হবে।