এ দিন মুরারই ১ ও ২ ব্লকে বিজয়া সম্মিলনীতে যোগ দেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি। তিহাড় জেল থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে বীরভূমে আসার পরে এটিই ছিল অনুব্রতের প্রথম দলীয় কর্মসূচি। মুরারই ১ ব্লকে, পশু হাটের মাঠে এই সভায় সংক্ষিপ্ত ভাষণে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নেতা নয়, কর্মী হওয়ার বার্তা দেন অনুব্রত। তাঁর বক্তৃতায় সেই পুরনো ‘ঝাঁঝ’ এ দিন পাওয়া যায়নি। বিজয়ার শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি নেতা নই। আমিও আপনাদের মতো ছোট্ট এক কর্মী। বুথের কর্মীরাই দলটাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।’’ কর্মীদের প্রতি তাঁর বার্তা, ‘‘কার জন্য ঝগড়া করবেন? আমার জন্য, মন্ত্রীর জন্য, বিধায়কের জন্য? পাশে ডেকে নিন, কাছে ডেকে নিন। তাতে দলের ভাল হবে।’’ এ ভাবে চললে আগামী বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের ফল আরও ভাল হবে বলেও দাবি করেন অনুব্রত।
তবে, মঞ্চ থেকে ‘কেষ্টদা’ এই বার্তা দিলেও মঞ্চের নীচে ধরা পড়ল অন্য ছবি। অনুব্রত মঞ্চ ছাড়ার পরেই সভার কাছেই খাবারের জায়গায় ডুমুরগ্রাম থেকে আসা তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। তার পরে তা গড়ায় হাতাহাতিতে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, দুই গোষ্ঠীর দু’জন আহত হয়েছেন। ডুমুরগ্রামের বুথ সভাপতি আশরাফুল শেখের আঘাত গুরুতর থাকায় তাঁকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিকেলে মুরারই ২ ব্লকের পাইকরের সভায় অনুব্রত মঞ্চে উঠতেই অতি উৎসাহীরাও মঞ্চে উঠে পড়েন। এর ফলে মঞ্চ ভেঙে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সকলকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে সভা শুরু হয়। পরে সভাস্থলে বসা নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহকে মাইক নিয়ে কর্মীদের ধমক দিতে দেখা যায়।
অন্যরা থাকলেও এ দিন লক্ষ্যণীয় ভাবে অনুপস্থিত জেলা সভাধিপতি কাজল শেখ। মুরারইয়ে কাজল এসেছেন কি না, সেই খোঁজও নেন অনুব্রত। পরে নিজেই বলেন, ‘‘এখানে আসতে পারেনি। পরে কোথাও আসবে।’’
অনুব্রত ফেরার পরে প্রথম সভাতেই এই ‘কোন্দল’ নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। দলের বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, “নিজেদের মধ্যে টাকার ভাগ নিয়ে মারামারি প্রত্যেক দিনের ঘটনা।” সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘বিড়ালকে বাঘ বানিয়েছিলেন তৃণমূলের নেতারা। তিহাড় ঘুরে এসে বাঘ বিড়ালে পরিণত হয়েছে।’’ তৃণমূলের বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, “বুথ সভাপতিকে মারধর করা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তবে এমন ঘটে থাকলে, কোনও ভাবেই সমর্থন করা যায় না। বিষয়টি জেনে বলতে পারব।”