এই সময়, হাওড়া: কলকাতা থেকে চিকিৎসার জন্য বাইরে যাবেন এক ব্যক্তি। কিন্তু হাওড়া স্টেশনে টিকিট কাটতে গিয়ে দেখেন টিকিট নেই। আবার কেউ যদি কোথাও বেড়াতে যান তখনও সময় মেনে টিকিট কাটতে গেলে পাওয়া যায় না ট্রেনের টিকিট। এ দিকে, টিকিটের দামের থেকে প্রায় পাঁচ গুণ বেশি টাকা দিয়ে দালালরা দিব্যি বিক্রি করছেন টিকিট। এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে বলে শোনা যায়। দিন কয়েক আগে হাওড়া স্টেশনে ১০ জন দালালকে গ্রেপ্তার করে আরপিএফ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠে এসেছে নানা তথ্য।আরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন খবর ছিল, বাইরের রাজ্যের এক শ্রেণির দালাল তৎকালে টিকিট কেটে তা রাজ্যের যাত্রীদের কাছে বিক্রি করছে। কী ভাবে তা সম্ভব হচ্ছে, তার তদন্ত শুরু হয়। তদন্তে জানা যায়, এ রাজ্যের দালাল চক্র বিভিন্ন রাজ্যে তাদের এজেন্ট ঠিক করছে। যথাসময়ে তারাই অন্য রাজ্য থেকে টিকিট কেটে এ রাজ্যে পাঠাচ্ছে।
দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে চিকিৎসার জন্য হাওড়া থেকে সারা বছর এ রাজ্যের লোকজন যাতায়াত করেন। তাই টিকিটের চাহিদাও বেশি। তা ছাড়া উৎসবের মরশুমগুলিতেও ভ্রমণের জন্য মানুষ ট্রেনের টিকিট কাটেন। তখন টিকিটের চাহিদাও বেশি থাকে। আরপিএফ-এর হাওড়া ডিভিশনের সিনিয়র ডেপুটি সিকিউরিটি কমিশনার চোক্কা রঘুবীর জানিয়েছেন, বেশির ভাগ দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলির দালালদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সিন্ডিকেট গঠন করেছে এ রাজ্যের দালালরা।
যে ১০ জনকে ধরা হয়েছে তার মধ্যে দু’জন হাওড়ায়। আন্তঃরাজ্য দালাল চক্রের পাণ্ডা মহাপ্রসাদ হালদারও আছে গ্রেপ্তারের তালিকায়। তাদের কাছ থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার টিকিট উদ্ধার হয়েছে।
তদন্তকারীরা জানান, কেউ ধরুন চেন্নাই যেতে চান, অথচ টিকিট পাচ্ছেন না। তখন ট্রাভেল এজেন্টের দ্বারস্থ হন। দালাল চক্র ট্রাভেল এজেন্টদের থেকে টিকিট ক্রেতাদের নাম, ঠিকানা জোগাড় করে। তারপর অন্য রাজ্যের দালাল চক্রকে জানায় তৎকালে টিকিট কেটে দেওয়ার জন্য। তারপর ওই টিকিট এ রাজ্যে আনানো হয়। ক্রেতাদের কাছে কেউ গিয়ে টিকিট পৌঁছে দিয়ে আসে। প্রত্যেক রাজ্যের টিকিট কাটার একটা কোটা থাকে। তাই তারা দক্ষিণের বিভিন্ন রাজ্যে এজেন্ট ঠিক করে রেখেছিল। বিষয়টি নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আরও তথ্য জানা যাবে বলে মনে করে আরপিএফ।