দিনহাটা বিধানসভার উপনির্বাচনে মাত্র এক হাজার ভোটের জন্য সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে রেকর্ড গড়তে পারেননি উদয়ন। ১ লক্ষ ৬৩ হাজার ৫ ভোটে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূলের ওই প্রার্থী। উদয়নের প্রাপ্ত ভোট ছিল ১ লক্ষ ৮৮ হাজারের বেশি। প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী অশোক মণ্ডল পান ২৫ হাজারের কিছু বেশি ভোট। সিতাই বিধানসভা উপনির্বাচনে ‘সর্বভারতীয় রেকর্ড’ করার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার বার্তা দিয়েছেন উদয়ন। শুক্রবার তিনি বলেন, ‘‘আমরা আজ থেকে ভোটের প্রচার শুরু করব। আমরা অপেক্ষা করে আছি, আমাদের নেত্রী (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) কখন আমাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবেন। যিনিই প্রার্থী হোন, আমরা তাঁকে জেতাতে ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়ব।’’ উদয়ন আরও বলেন, ‘‘আমি যখন উপনির্বাচনে লড়েছিলাম, তখন এক হাজার ভোটের জন্য সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে রেকর্ড করতে পারিনি। এ বার সেটা টপকে আমরাই রেকর্ড করব বলে আশা করছি।’’
মন্ত্রী এর পর বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘সে রামই হোক, বামই হোক বা অন্য কোন রাজনৈতিক দল, যাঁরা শিরদাঁড়ার ব্যবসা করছেন, শিরদাঁড়া নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তাঁদের শিরদাঁড়া এ বারের নির্বাচনে এমন ভাবে বেঁকিয়ে দেওয়া হবে যে সহজে আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবেন না। আগামী দিনে বাঁকা শিরদাঁড়া নিয়ে লাঠিতে ভর দিয়ে তাঁদের চলতে হবে।’’ বস্তুত, আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে চিকিৎসকেরা শিরদাঁড়া নিয়ে আন্দোলন করছেন। গত মঙ্গলবার রাজ্য সরকারের পুজো কার্নিভালে দায়িত্বে থাকার সময়ে যে সরকারি চিকিৎসককে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল, তাঁদের পরনেও ছিল ‘শিরদাঁড়া বিক্রি নেই’ লেখা টি-শার্ট।
গত ৩ সেপ্টেম্বর লালবাজারে তৎকালীন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময়ে প্রতীকী শিরদাঁড়া ছিল জুনিয়র ডাক্তারদের হাতে। দ্রোহকালের বাংলায় কিছু দুর্গাপুজোরও ‘থিম’ হয়ে দেখা দিয়েছিল শিরদাঁড়া। তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় শেষ পর্যন্ত কিছু পুজো কমিটিকে পিছু হটতেও হয়েছে। উদয়নের এই আক্রমণ আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের উদ্দেশে, না কি নির্দিষ্ট কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতি, তা তিনি পরিষ্কার করেননি। তবে মন্ত্রীর ওই মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন বিরোধীরা। কোচবিহারে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ সবসময় ভাষা-সন্ত্রাস করেন। তিনি কখনও কারও হাঁটু ভাঙতে চান, কখনও দাড়ি উপড়ে নিতে চান। তিনি এ বার বলছেন শিরদাঁড়া বেঁকিয়ে দেবেন।’’ বিরাজের কটাক্ষ, উদয়ন উত্তরবঙ্গের মন্ত্রী। কিন্তু তাঁকে দিনহাটার বাইরে আর কোথাও দেখা যায় না। তিনি বলেন, ‘‘উনি বাবার (কমল গুহ) হাত ধরে রাজনীতিতে এসেছেন। এখনও সময় রয়েছে। নিজেকে শুধরে না-নিলে আগামী দিনে মানুষ তার জবাব দেবে।’’