অপূর্ব দাবি করেছিলেন, নিহত চিকিৎসকের দেহের ময়নাতদন্ত দ্রুত করার জন্য তাঁকে চাপ দেওয়া হয়েছিল। অন্যথায় ‘রক্তগঙ্গা বইয়ে’ দেওয়ার হুমকিও তাঁকে দেওয়া হয়েছিল বলে জানান অপূর্ব। এর আগে তিন বার সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিয়েছেন তিনি। সিজিও কমপ্লেক্সের সামনে দাঁড়িয়ে অপূর্ব সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ঘটনার পর মৃতার ‘কাকা’ পরিচয় দিয়ে এক জন তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন। ময়নাতদন্তের জন্য তাঁকে তাড়া দেওয়া হয়েছিল। অপূর্বের দাবি, তাঁকে বলা হয়েছিল, “তাড়াতাড়ি ময়নাতদন্ত না-হলে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেব।”
ময়নাতদন্তকারী ডাক্তারের এই বয়ানে নতুন করে কৌতূহল তৈরি হয়। নির্যাতিতা তরুণীর সেই ‘কাকা’ আসলে কে, তা নিয়ে বিস্তর চর্চা হয় বিভিন্ন মহলে। পরে উঠে আসে সঞ্জীব নামে এক ব্যক্তির পরিচয়, যাঁকে নির্যাতিতা ‘কাকু’ বলে সম্বোধন করতেন। অবশ্য তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বলেছেন, ‘‘ডাক্তারবাবু বললে ঠিক, আমি বললে ভুল? ডাক্তারবাবুরটাই বেদবাক্য! আমি বলছি, ওই ব্যক্তি আমি ছিলাম না। ওই জায়গায় বড় বড় পুলিশকর্তা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আমি বললে কি কিছু হবে? অত বড় হাসপাতালে ওই ডাক্তারকে কী করে চিনব? কে ময়নাতদন্ত করবেন, তা জানব কী করে?’’ উল্লেখ্য, নির্যাতিতার দেহ দাহ করার সময়েও তিনি উপস্থিত ছিলেন শ্মশানে। দাহ করানোর নথিতেও তাঁর সই রয়েছে। সে প্রসঙ্গেও তিনি বলেছিলেন, ‘‘ওঁর বাবা ডেকেছিলেন তখন। মেয়ের মৃত্যুর পর ওঁদের মাথা ঠিক ছিল না। দাহের শংসাপত্রে আমি সই করি। সেই কাগজ ওদের বাড়িতে ছিল। পরের দিন সেটা নিয়ে পুরসভা থেকে মৃত্যুর শংসাপত্র নিয়ে আসি।”
এর পরেও একাধিক বার অপূর্বকে সিজিওতে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। শুক্রবার আবার কেন তাঁকে ডাকা হল, তা স্পষ্ট নয়। সিবিআই দফতরে প্রবেশের সময়ে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি অপূর্ব।
আরজি করের ঘটনার পর কেন সেই হাসপাতালেই তড়িঘড়ি চিকিৎসকের দেহের ময়নাতদন্ত করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। দ্রুত দেহ দাহ করে ফেলা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে তারা। আগেই পুলিশ গ্রেফতার করেছিল মূল অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে। কিছু দিন আগে ঘটনার চার্জশিটে সিবিআই দাবি করেছে, মূল অভিযুক্ত এক জনই। এই আবহে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসককে আবার ডাকা হল সিজিওতে।