এই সময়, ভাঙড়: দুপুর দুটো থেকে সন্ধ্যা ৬টা। চার ঘণ্টা একটানা বৃষ্টির দাপট দেখল দক্ষিণ শহরতলি। সোনারপুর, ভাঙড়, জীবনতলা, রাজারহাট সর্বত্র মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। তার সঙ্গে ঘন ঘন বজ্রপাতে মৃত্যু হলো এক ব্যক্তির। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সব্জি ও ফুল চাষের।
ভাঙড়ের দক্ষিণ বামুনিয়ার বাসিন্দা খতিব আলি সাঁফুই (৪০) এ দিন মাঠে চাষ করার সময় বজ্রপাতে মারা যান। পাশের গ্রাম চাঁদামারির বাসিন্দা ভুলু রায় (৩৫) এ দিন বৃষ্টি মাথায় মাঠে কাজ করতে গিয়ে বাজ পড়ে আহত হন। প্রবল বৃষ্টিপাতে বহু নিচু জমি, ভাঙা রাস্তা, ওয়ার্ডের গলিতে জল জমে যায়। বিকেলে কাজ থেকে বাড়ি ফিরতে সমস্যায় পড়েন বহু মানুষ। এ দিন আচমকা বৃষ্টির যা দাপট ছিল তা কার্যত গোটা বর্ষাকালেই দেখা যায়নি।শুক্রবার সকাল থেকেই রোদ-বৃষ্টির লুকোচুরি চলছিল। দুপুর দুটো নাগাদ হঠাৎ কালো মেঘে ঢেকে যায় গোটা আকাশ। তার পরই হুড়মুড়িয়ে বৃষ্টি নামে দক্ষিণ শহরতলিতে। কয়েক ঘণ্টার অতি ভারী বর্ষণে সোনারপুরের বিভিন্ন ওয়ার্ড, সোনারপুর থানা, স্টেশন চত্বরে জল জমে যায়। পরে অবশ্য সেই জল নেমে যায়।
তবে সমস্যায় পড়েন ভাঙড়ের চাষিরা। বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ফুলকপি, পালং শাক, লঙ্কা খেতের। পিঠাপুকুর গ্রামের চাষি নাইমুল ইসলাম বলেন, ‘সবে ছোট ছোট ফুলকপি বাজারে ওঠা শুরু হয়েছিল। ৩০০ গ্রাম ওজনের ফুলকপি ৩০ থেকে ৪০ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছিল। এই বৃষ্টিতে সব নষ্ট।’ চণ্ডীহাট গ্রামের চাষি সাধন মণ্ডল বলেন, ‘এই সময় মাঠভর্তি পালং, কপি, লঙ্কাগাছ ছিল। টানা বৃষ্টিতে মাঠে জল জমে গিয়েছে। চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হলো এই বৃষ্টিতে।’
ভাঙড়ের পাইকারি সব্জি বিক্রেতা মন্টু মোল্লা বলেন, ‘দুর্গাপুজোর সময় থেকেই জিনিসপত্রের দাম অগ্নিমূল্য। বেগুন, লঙ্কা, টোম্যাটো, ফুলকপি সব কিছুর দাম সেঞ্চুরি পার করে ডাবল সেঞ্চুরির দিকে এগোচ্ছে। এ দিনের বৃষ্টি চাষিদের কোমর ভেঙে দিল। সব্জির দাম আরও বাড়বে।’ ভাঙড়-২ ব্লকের বিডিও পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ঘণ্টা চারেক একটানা মুষলধারে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তাতে চাষের ক্ষতি হওয়া স্বাভাবিক। তবে কৃষি দপ্তর থেকে রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত ক্ষয় ক্ষতি সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করা যাবে না।’